সাব্বির মির্জা স্টাফ রিপোর্টার

সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠার নিমিত্তে অংশীজনের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রবির অ্যাকাডেমিক ভবনের লেকচার থিয়েটারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সভায় রবি’র ভিসি ড. মোঃ শাহ্ আজম বলেন, শাহজাদপুরের মানুষের দৃষ্টির একটি কেন্দ্রবিন্দু রবি। নানা সংকট অতিক্রম করে রবি এখন অগ্রসরমান। রবির ৫ বছর বয়সে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। এ বিশাল প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ক্যাম্পাস নেই। মানুষের নানা নেতিবাচক ধারণা রবি নিয়ে।এমতাবস্থায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহায়তায় রবির শিক্ষা কার্যক্রমকে সচল ও গতিমান করেছি সর্বাগ্রে। ক্রমান্বয়ে শিক্ষার মানকে উন্নত করেছি। সেইসাথে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক মান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা গ্রহণ করা হয়েছে। রবি এখন পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপলাভ করেছে। রবির আই-কিউ এসি সেলকে উজ্জীবিত করা হয়েছে এবং তা এখন পূর্ণ উদ্দ্যমে কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত মানের সেমিনার ভেন্যু তৈরি করা হয়েছে। এ ভেন্যু লেকচার থিয়েটার হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। সংগীত বিভাগের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা পরিচালনার জন্য একটি উন্নত মানের স্টুডিও থিয়েটার তৈরি করা হয়েছে। অ্যাকাডেমিক ক্যাম্পাস-২ তে কম্পিউটার ল্যাব তৈরিসহ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুবিধার্থে লাইব্রেরি সুবিধা সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

রবি’র ভিসি বলেন, রবিকে সাংস্কৃতিক পুণ্যভূমি হিসেবে গড়ে তুলতে অত্যন্ত বৃহৎ আয়োজনে সকল দিবস পালনসহ বইমেলার আয়োজন এবং রবির ৮টি ক্লাব নির্মাণ করা হয়েছে। এসব কিছুর বাইরেও রবির দেশের প্রতি, কমিউনিটির প্রতি একটি দায়বদ্ধতা রয়েছে। এতে এ অঞ্চলের যে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তা পুনঃনির্মাণ ও বেগবান করার দায়িত্বও রবি কাঁধে নিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রবীন্দ্র কাছারি বাড়ির ইতিহাস ও ঐতিহ্যসমৃদ্ধ বকুলতলা মঞ্চ পুনরুদ্ধার করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে ফেব্রুয়ারি-২০২২ পালন করা হয়েছে। রবির এখন প্রধান লক্ষ্য স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মান করা। এজন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ইউজিসিতে জমা দেয়া হয়। ইউজিসি অনুমোদন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে তা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় হয়ে একনেকে যাবে। কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ সুদৃঢ় করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবনা দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছে। গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এই প্রথম ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এতে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কাজগুলো করার অভিজ্ঞতা রবির হয়েছে। শুধুমাত্র একটি ক্যাম্পাসের অভাবে রবির ছন্দময় অভিযাত্রা শতভাগ দেখাতে পারছি না। এ বিশ্ববিদ্যালয়টি একজন নোবেলজয়ী সাহিত্যিকের নামে প্রতিষ্ঠিত। যে বিশ্ববিদ্যালয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে স্থাপিত হয়েছে এবং সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ব্যাচ ক্যাম্পাস ছাড়া বাহির হয়ে যাবে তা দুঃখজনক। শিক্ষার্থীরা যেন নিজেদের জায়গায় ছন্দময় পদচারণা করতে পারে সেক্ষেত্রে সরকার নিশ্চয় সদয় হবেন।

তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে ভারত সফর করেছি এবং সেখানে বাংলাদেশ হাইকমিশনের আমন্ত্রণে বিজয় দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছি। সেখানে বিশেষ করে কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মানুষের যে অভিমত ও মূল্যায়ন তা অত্যন্ত উচ্চমানের। সেখানে ৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ও একটি ইনস্টিটিউটে (বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্বভারতী, রবীন্দ্র ভারতী এবং ইস্টার্ন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টিগ্রেটেড লার্নিং ইন ম্যানেজম্যান্ট, কলকাতা) বক্তৃতা ও মতবিনিময় করেছি। রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার এক বছর অতিক্রান্ত হওয়ায় কমিউনিটির প্রতিনিধিগণের সাথে একটা সভা করছি। সেই সভাতে আপনাদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান যদি কোন সুযোগ থাকে আপনারা সেই সহযোগিতার হাত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে বাড়িয়ে দিবেন।

এ সময় রবির ট্রেজারার প্রফেসর ড. ফিরোজ আহমদ, রেজিস্ট্রার সোহরাব আলী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ফখরুল ইসলাম, সকল বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষকবৃন্দ ও কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে রবির শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে রবির ভিসির সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!