আমির হোসেন স্টাফ রিপোর্টার

সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুরের হাওরাঞ্চলে শেষ সময়ে ঈদ বাজার জমে উঠেছে। জেলা শহর সহ উপজেলার বাজারের ফ্যাশন দোকানগুলো এখন জমজমাট। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। জেলা শহর, উপজেলার বাজারের মার্কেট, বিপণী বিতান, ফুটপাতের দোকানগুলোতেও মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সাধারণ ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে বাজারের দোকানগুলোর সামনে সাজানো হয়েছে রঙিন আলোকসজ্জা।
গতকাল দেখা যায়, এবারের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাহারি ডিজাইনের পোশাক সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। প্রথমদিকে বিক্রি ভাল না হলেও ২২ রোজার পর থেকে ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মার্কেটগুলো। তবে, ক্রেতাদের অভিযোগ, এবারের ঈদে পোষাকের মূল্য একটু বেশি। পোশাক ক্রয় করতে গিয়ে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন। পোশাকের পাশাপাশি জুতার দোকানেও উপচে পড়া ভিড় করছেন ক্রেতারা। শিশু, নারী, তরুণ- তরুণীরা বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা ক্রয় করেছেন। এবার হাওরাঞ্চলের বাজারগুলোতে পুরুষের পাশাপাশি নারী ক্রেতারাও মার্কেটে ভরপুর। তাদের পছন্দের জামা, কাপড়, শাড়ি, জুতা ও প্রসাধনী ক্রয় করে খুশি মনে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। এবার ঈদ বাজারে নারী ক্রেতাদের বেশি ঝোঁক বাহারি থ্রি-পিসের দিকে। নায়রাকাট, গারারা, সারারা, পরমা পোশাক, কামদানি ফুলকাড়ি, চুণ্ডিসুতি, রাজমহল, কাতান থ্রি-পিস, কাতান শাড়ি, জেসান, টাইমলেস, বেনারসি, ভিক্টোরিয়া, গ্যালাক্সি, বুটিকস, কারচুপি, লেহেঙ্গা, পার্টিগাউন, স্যামুসিল্ক, জর্জেট টুপার্ট নামের থ্রি-পিসগুলো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জামদানি, সিল্ক, কাতান ও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়িও বিক্রি হচ্ছে। বড়দের পাশাপাশি শিশুরা ক্রয় করছে জিন্সের হাফপ্যান্ট, জামা ও ফতোয়া। বড়রা ক্রয় করছেন জিন্সের প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট ও পাজামা-পাঞ্জাবি।
তাহিরপুর সদর বাজারে ক্রেতা শাহানারা বলেন, এবার কাপড়, জুতা সহ সব কিছুরই দাম একটু বেশি মনে হচ্ছে। এরপরও কিনতে হয়েছে ছেলে মেয়েদের ঈদে খুশি করার জন্য।
বালিয়াঘাট বাজারে দোকানদার হাবলু বলেন, মার্কেটের দোকান থেকে বাহিরের ফুটপাতে শেষ সময়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে, তারা লাভও করছেন বেশি।
মেসার্স সানি এন্ড মিটি সু ষ্টোরের মালিক সেলিম রেজা বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ক্রেতাদের চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে নানা ধরনের ভাল মানের জুতান তুলেছি দোকানে। বাইশ রোজার পর থেকেই বিক্রি ভাল হচ্ছে।
বাদাঘাটা বাজারের দিগন্ত ফ্যাশনের স্বত্ত্বাধিকারী কুখন মিয়া বলেন, রমজানের প্রথমদিকে বেচাকিনা কম ছিল। ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই ক্রেতাদের সমাগম বাড়ছে এবং বিক্রিও বেশি হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ শহরের মৌ ফ্যাশনের মালিক কদ্দুস বলেন, এবার ঈদের বেচাকেনা খুব ভাল। বিশেষ করে নারীদের পোশাক হিসেবে থ্রি-পিসই সর্বোচ্চ বিক্রি হচ্ছে তার দোকানে। পাশাপাশি শাড়িও বিক্রি হচ্ছে।

বাদাঘাট বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি সেলিম হায়দার বলেন, ক্রেতাদের সুবিধার্থে যানজট এড়াতে পুলিশ এবং বাজার কমিটির পক্ষ থেকে শহর এবং উপজেলার বাজার গুলোর প্রবেশমুখে ইজিবাইক ও রিকশা চলাচল সীমিত করা হয়েছে। যার কারণে ক্রেতা বিক্রেতারা সহজেই কেনাবেচা করতে পারছেন।

তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন এবং বিশ্বম্ভপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শ্যামল চন্দ্র বনিক মানবজমিনকে বলেন, জেলা শহর এবং উপজেলার বাজারগুলোতে যাতে সহজে কেনাকাটা করতে পারেন ক্রেতারা সেজন্য সকল ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শহর, বাজারে যত্রতত্র যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহর, বাজারের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!