সাব্বির মির্জা স্টাফ রিপোর্টার

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সঙ্গে দলীয় নেতাদের দ্বন্দ্ব এবার প্রকাশ্যে এলো। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মোমিন মণ্ডল নিজ বলয় তৈরি করতে দলে জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থান দিচ্ছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতায় কমিটি গঠন, দলীয় চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কারণে সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে দল। 

বিরোধীরা বলছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হওয়ার পর থেকে সাধারণ সম্পাদককে দূরে রেখে একক সিদ্ধান্ত নিয়ে দলকে গতিহীন করছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। ইউনিয়নে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে সমন্বয় না করে একক সিদ্ধান্তে কমিটি দিচ্ছেন। এসব বিষয়ে দলের নেতাকর্মীরা জেলা কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন বলে জানান। 

সংসদ সদস্যের এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস। দীর্ঘদিন পর তার সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সংসদ সদস্যের সঙ্গে দলীয় নেতাদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে এলো। 

সংবাদ সম্মেলনে আশানুর বিশ্বাস বলেন, ‘বেলকুচির ছয়টি ইউনিয়নের পাঁচটিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও এমপি মহোদয় এককভাবে তার মনোনীত ইউনিয়নের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক যেকোনো একজনকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করছেন। বেলকুচি সদর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মির্জা মরিয়মকে বাদ রেখেই সভাপতিকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে পরিচিতি সভা করেছেন। এ ছাড়াও দৌলতপুর ও বড়ধুলেও একই কাজ করেছেন।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘দলে তার (এমপি) বলয় বাড়াতে কমিটিতে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের স্থান দিচ্ছেন। এনায়েতপুরে সরকারবিরোধী নাশকতার মামলার আসামিকে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বানিয়েছেন। এ ছাড়া দলের কোনো কর্মকাণ্ডে তিনি উপস্থিত থাকেন না। আমরা এর প্রতিকার চাই। তার কারণে ৯ মাসেও উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।’ 

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি লুতফর রহমান মাখন, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মালেক তালুকদার, সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক মহাদেব সাহা, সাবেক কার্যকরী সদস্য এমদাদুল হক এমদাদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সিহাব উদ্দিনসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলের মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। তার ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম সরকার বলেন, ‘এমপি মহোদয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বৈঠক করে পাঁচটি ইউনিয়নের কমিটি অনুমোদন করেছেন। তাদের কোনো কথা থাকলে তার সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন।’ 

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কে এম হোসেন আলী হাসান বলেন, ‘দলের যেকোনো সিদ্ধান্ত সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সবাইকে নিয়ে নিতে হয়। কোন্দল মেটানোর জন্য কাজ করছি। আশা করছি, আগামী মাসের মধ্যেই কোন্দলের অবসান হবে। অন্যথায় কেন্দ্রীয় কমিটির সহযোগিতা নেওয়া হবে।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!