সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নার্গিস বেগম (৩৮) নামে এক গৃহবধুকে নির্যাতন পর হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে ঘরে তালা বদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে ওই গৃহবধুর শশুড়, ননদ ও দেবরের বিরুদ্ধে।

সোমবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার বারুহাস ইউনিয়নের সান্দা গ্রামের আনছের আলীর বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটে।
দুই সন্তানের জননী নার্গিস বেগম ওই গ্রামের ইউনুস আলী (৪০)’র স্ত্রী।
এ দিকে তাড়াশ থানা পুলিশ খবর পেয়ে গৃহবুধ মরদেহ উদ্ধার করে মঙ্গলবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।
মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় গৃহবুধর শশুড় আনছের আলী, ননদ রাবেয়া খাতুন ও দেবর ইয়াকুব আলীকে থানায় নিয়ে এসে তাঁদের জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে।
গৃহবধুর স্বামী ইউনুস আলী জানান, প্রায় বিশ বছর পূর্বে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর ইউনিয়নের রুহাই গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের মেয়ে নার্গিস বেগমকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করি। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই আমার বাড়ির লোকজন শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছিলেন। তারপরও স্বামী-স্ত্রীতে চমৎকার বোঝা পড়ার মাধ্যমে বারুহাস বাজারে একটি তৈষজ পত্রের দোকান দিয়ে এবং বাড়িতে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগী লালন-পালন ও কিছু ফসলী জমি কিনে এবং লীজ রেখে সংসারটি স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আমার বাবা, বোন, মা ও ভাই তাঁদেরকে আর্থিক ভাবে দেখ ভাল না করার অপরাধ এনে শারিরিক ও মানসিক ভাবে আমাকে ও আমার স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত নির্যাতন করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার তিনদিন পূর্বে আমার বাবা আনছেন আলী, বোন রাবেয়া খাতুন ও ভাই ইয়াকুব আলী আমাকে মারধর করেন। এতে আমার স্ত্রী প্রতিবাদ করায় তাঁর উপর চড়াও হয়।
পরে সোমবার আমি এবং আমার সন্তানরা বাড়িতে না থাকায় বাবা আনছেন আলী, বোন রাবেয়া খাতুন ও ভাই ইয়াকুব আলী ও আমার মা মিলে ভাই ইয়াকুবের ঘরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে মেরে রশিতে ঝুলিয়ে রাখে।
অবশ্য, স্বামী ইউনুস আলী স্ত্রী হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করে বলেন, আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করতে পারেন না। তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
আর গৃহবুধ নার্গিসের বাবা মো. নুরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে ঘরে তালা বদ্ধ করে রাখা হয়।
তবে হত্যা না আত্মহত্যা এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা জিজ্ঞসাবাদের জন্য গৃহবুধর শশুড়, ননদ ও দেবরকে থানায় নিয়ে এসেছি। পাশাপাশি মরদেহ ময়না তদন্তের সিরাজগঞ্জ জেলায় পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে মামলা দায়ের প্রস্তুতিও চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!