মোসাদ্দেকুর রহমান সাজু,স্টাফ রিপোর্টার,ডোমার নীলফামারীঃ নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ২ নং কেতকীবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ কেতকীবাড়ী দালালগঞ্জ এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ছোটবোনসহ জামাইয়ের হাতে বড়বোন ও দুলাভাই গুরুতর আহত হয়ে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার অবনতি দেখা দিলে কর্তব্যরত ডাঃ তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন, বর্তমানে তিনি রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানাযায় রবিবার ৭ মে সকাল এগারোটায় দক্ষিণ কেতকীবাড়ী ইউনিয়নের দালালগঞ্জ এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
অভিযোগ সুত্রে জানাযায়, তফশিল বর্ণিত জমি যাহা সাহেরা বেগম তাহার মরহুম পিতা মতিয়ার রহমানের কাছে ০৮ শতক জমি হেবা ঘোষণা পত্র এবং পরে ০৮ শতক জমি কবলা মূলে মোট ১৬ শতক জমি তাহার নামে রেজিষ্ট্রী করিয়া নিজ দখলিকার থাকিয়া ভোগদখল করিয়া আসিতেছিল। পরবর্তীতে সাহেরা বেগম উক্ত সম্পত্তি থেকে ছোট বোন শাহানা বেগমকে ০৮ শতাংশ জমি দানপত্র করেন। নিন্ম তফসিল বর্ণিত দাগে ১৬ শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রী হলেও মাপযোগে সেখানে ১৫ শতাংশ জমি পাওয়া যায়। এই নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত ২ বোনের মধ্যে ঝগড়াঝাটি ও বাগবিতণ্ডা লেগেই থাকতো। পরবর্তীতে বিষয়টি স্থানীয় প্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে মাপযোগ করিয়া ১৫ শতাংশ জমি দুই বোনের মধ্যে সাড়ে সাত শতক করে ভাগ করিয়া সীমানা নির্ধারণ করিয়া দেয়, ইহাতে উভয় পক্ষই সম্মতি ঞ্জাপন করেন। সেই সীমানা নির্ধারনের পরেই ছোটবোন শাহানা বেগম বিগত দুই বছর আগে সেই জমিতে বসতবাড়ি নির্মানের কাজ শুরু করে।
এরই মধ্যে গত প্রায় ১৫/২০ দিন পূর্ব হইতে শাহানা বেগম নতুন করে তাহার নামে রেজিষ্ট্রীকৃত জমি ০৮ শতাংশ দাবি করেন এবং সাহেরা বেগমের পরিবারের লোকজনের উপর বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করিয়া আসিতেছে। এরই জের ধরে গত ৭ মে সকাল এগারোটায় ছোটবোন শাহানা বেগম ও তার জামাই এবং দুই ছেলে অতর্কিত ভাবে অনাধিকার প্রবেশ করিয়া সাহেরা বেগমের বাড়িতে হামলা চালিয়ে অটোবাইক কেনার ঘরে রক্ষিত ২ লক্ষ টাকাসহ বাড়িঘর ভাংচুর করে। এ সময় সাহেরা বেগমের স্বামী আশরাফুল এবং তার মা বাধা প্রদান করিলে সাহানা বেগম ও তার স্বামী টিপু খান এবং ছেলে মেহেদী হাসান হাতে বাসিলা ও লোহার রড দ্বারা তাদেরকে বেধড়ক এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট শুরু করে।এসময় তাদের ডাক চিৎকারে প্রতিবেশী লোকজন এসে তাদেরকে উদ্ধার করে ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়। সেখানে ২দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর অবস্থার অবনতি হলে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে সাহেরা বেগমের স্বামী আশরাফুল ইসলাম উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই ঘটনায় আশরাফুলের স্ত্রী সাহেরা বেগম বাদী হয়ে ডোমার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
এবিষয়ে সাহানা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানায়, আমার মরহুম পিতা মতিয়ার রহমান ২ বোনের কাছে ২৪ হাজার টাকার বিনিময়ে ১৫ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। আমার ক্রয়কৃত জমিতে আমি কাজ করতে গেলে সাহেরা বেগম এবং তার স্বামী আশরাফুল বাধা প্রদান করেন এবং আমার হাতব্যাগে রক্ষিত ৬ হাজার টাকা সাহেরা বেগমসহ তার স্বামী আশরাফুল ব্যাগটি কাঁড়িয়া যাওয়ার পথে আমি বাধা প্রদান করিলে তারা আমাকে মাটিতে ফেলিয়া উপুর্যপুরি মারপিট শুরু করে। আমাকে বাঁচানোর জন্য তখন আমার স্বামী ও সন্তানেরা দৌড়ে এসে তাদের কবল থেকে আমাকে রক্ষা করে। তারপর আমরাও তাদেরকে মারপিট শুরু করি। টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের সংসারে একবেলা খেলে অন্য বেলা কি খাবে সেই টাকা যোগান দিতে পারেনা আর তাদের ঘর থেকে আমরা ২ লক্ষ টাকা নিয়ে এসেছি এসব তাদের সাজানো নাটক এবং মিথ্যা কথা।
এবিষয়ে ডোমার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ উন-নবী অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!