সাব্বির মির্জা স্টাফ রিপোর্টার

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় একটি তেঁতুল গাছে মনের বাসনা মানত পূরণে নতুন গামছা, শাড়ি বেঁধে রাখা হয়। গাছের তলায় মোমবাতি ও ধুপকাঠি জ্বালানো হয়ে থাকে। পুরোনো গাছটিতে বেঁধে রাখা গামছা, শাড়ি বেশকটি ডাল সবসময় ভরপুর হয়ে থাকে। এখন যেমন আছে। নামকরণ হয়েছে পীততলা। এলাকার কেউ বেঁধে রাখা গামছা, শাড়ি ক্ষতি হবে ভয়ে খুলে নেয় না।

উল্লাপাড়া উপজেলার বড় পাঙ্গাসী ইউনিয়নের খাদুলী গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় তেঁতুল গাছটি খোলা জায়গার এক পাশে। গাছটির চারপাশ ঘিরে ইটের গাঁথুনিতে বেঁধে দেওয়া হয়েছে। গাছটি খুব বেশি উঁচু নয়। তবে গাছের গোড়া বেশ জায়গাজুড়ে আর গুল বেশ মোটা। এখানে গাছটির কাছাকাছি দুটি মন্দির আছে। নিয়মিত পূজা-অর্চনা করা হয় বলে জানানো হয়। এখানকার ভিটেবাড়ির আশপাশে মুসলমান ও হিন্দু সম্প্রদায় মিলে কয়েকটি বসতবাড়ি আছে।

সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা ও জানা গেছে, তেঁতুল গাছটির নিচের ডালগুলোয় নতুন-পুরোনো মিলে বহু সংখ্যক গামছা, শাড়ি বাঁধা আছে। গাছটির বয়স সঠিক করে কেউ বলতে পারেন না। খাদুলী গ্রামের ৭৬ বছর বয়সি রামেশ্বর চন্দ্র দাস বলেন, তার জ্ঞান বুদ্ধি হওয়ার পর থেকেই গাছটি এমন অবস্থায় দেখছেন। তার পিতাও এমনি দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। একই গ্রামের মোজাহার আলী (৭০), শহিদুল ইসলাম (৪৮), ইছাহাক আলী আকন্দ (৬০), সঞ্চয় ভৌমিক (৩৮), গৃহবধূ সবিতা রানী, আনোয়ারাসহ আরো কজন জানান, তারা সেই ছোটোবেলা থেকেই গাছটি এখনকার অবস্থায় দেখে আসছেন। সবার কথায় গাছটি শত বছরের বেশি বয়সি। প্রায় বিশ বছর ধরে গাছটিতে বিভিন্ন এলাকার জনগণ তাদের মনের বাসনা মানত পূরণে নতুন গামছা নয়তো শাড়ি বেঁধে রেখে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুসলমান, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আসেন বলে জানানো হয়। এখানে বেঁধে রেখে যাওয়া গামছা-শাড়ি ক্ষতি হবে ভয়ে কেউ খুলে নেয় না। প্রতিবেদককে রামেশ্বর চন্দ্র দাস বলেন, এখানে মানত করতে আসা ব্যক্তিরা পরম ভক্তি-শ্রদ্ধায় গামছা কিংবা শাড়ি বেঁধে রেখে যান। এখানকার বসতি সঞ্চয় ভৌমিক বলেন, ভক্তি আর বিশ্বাসে মানতকারীরা গামছা-শাড়ি বেঁধে রাখেন। তিনি মানতকারী বহুজনের কাছে জেনেছেন, বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি ও নানা মনের বাসনা পূরণ হয়ে থাকে বলে তারা এসে গামছা-শাড়ি বেঁধে রেখে যান।

এলাকার ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিনি ছোটোবেলা থেকেই দেখে আসছেন শুধু নিজ খাদুলী গ্রামের নয় বিভিন্ন এলাকার বহু ব্যক্তি বিশ্বাস করে মানত পূরণে এখানে আসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!