আবদুল কাদের চট্টগ্রাম

পবিত্র জশনে জুলুছে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উপলক্ষ্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ তরিক্বতের ঐতিহাসিক গাউছুল আজম কনফারেন্সে লাখো আশেকে রাসুলের ঢল নেমেছে।

সোমবার (০৪ মার্চ) চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়তুল ফালাহ্ জাতীয় মসজিদ ময়দানে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মাননীয় মোর্শেদ আওলাদে রাসূল (দ.) হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।

প্রধান মেহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন- প্রিয় নবীজির ভালোবাসা একজন মুমিনের জীবনের পরম সম্পদ। নবীজির ভালোবাসা ও অনুসরণ-অনুকরণের মাধ্যমে একজন সাধারণ মানুষ ইনসানে কামেল তথা আলোকিত মানুষে পরিণত হয়। খলিফায়ে রাসূল (দ.) হযরত গাউছুল আজম (রা.) এর প্রতিষ্ঠিত তরিক্বতের অনুশীলন মানুষকে একদিকে নবীজির ভালোবাসার শিক্ষা দান করে অন্যদিকে শরীয়ত ও সুন্নাতের দীক্ষায় দীক্ষিত করে তোলে। প্রিয় নবীজির নূরে বাতেন ক্বলবে গ্রহণ, মোরাকাবা, ফয়েজে কুরআন, জিকিরুল্লাহ, হারাম-হালাল পৃথক করে জীবন ধারণের মধ্য দিয়ে আল্লাহ পর্যান্ত পৌঁছার শাশ্বত সোনালি রূপরেখা হলো হযরত গাউছুল আজম (রা.) এর তরিক্বত। মুহাব্বতের নিয়তে দৈনিক ১১১১ বার দরূদ শরীফ আদায়ের মাধ্যমে নবীজির নৈকট্য অর্জনের সাধনা রয়েছে এ তরিক্বতে। শেষ যুগে এসে এমন এক যুগান্তকারী তরিক্বতের প্রতিষ্ঠা হলো যা শরীয়তের মাপকাঠিতে অনন্য, সুন্নাতে রাসূলের অনুশীলনে বেনজির। যেখানে নেই শিরকের বিন্দুমাত্র অবকাশ, বিদআতের নেই কোনো ধরণের সুযোগ। এবাদত-এখলাস ও খলিফায়ে রাসূল (দ.) এর চোখের জলে সাজানো হযরত গাউছুল আজম (রা.) এর এ তরিক্বত। ফলশ্রুতিতে রূহানিয়তের বিকাশের মাধ্যমে সূচিত হলো আধ্যাত্মিক এক বিপ্লবের যা অশান্ত মনে এনে দেয় প্রশান্তি, অস্থির জীবনে এনে দেয় রহমতময় স্থিরতা।

কনফারেন্সে যোগদানের উদ্দেশ্যে সকাল থেকেই চট্টগ্রামের আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, সীতাকুন্ড, বোয়ালখালী, আনোয়ারা পটিয়া ছাড়াও রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, মহেশখালী থেকে গাড়িযোগে কাগতিয়া দরবারের অসংখ্য অনুসারী, ভক্ত ও সাধারণ মুসলমানেরা কনফারেন্সস্থলে আসতে থাকে। চট্টগ্রাম ছাড়াও ফেনী, কুমিল্লা, বি.বাড়িয়া, চাঁদপুর ও ঢাকা থেকেও কাগতিয়া দরবারের হাজার হাজার অনুসারী ও মুসলমানেরা উপস্থিত হন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আবুল মনছুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গাউছুল আজম কনফারেন্সে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক গভর্নর ড. মুহাম্মদ কফিল উদ্দিন সরকার সালেহী, সংগঠনের কানাডা শাখার সভাপতি মুহাম্মদ আব্দুল ওয়াহিদ, প্রফেসর ড. জালাল আহমদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ নুর খান।

বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুহাম্মদ শফিউল আলম, মাওলানা মুহাম্মদ আবদুস সবুর, মাওলানা মুহাম্মদ ফোরকান, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ রকিব উদ্দিন প্রমুখ।

শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আলোকসজ্জিত করা হয় এবং চট্টগ্রামের প্রায় সকল প্রবেশমুখে ও বিভিন্ন উপজেলায় উত্তোলন করা হয় তোরণ। মাগরিবের আগেই কনফারেন্সস্থল গাউছুল আজম কমপ্লেক্সের বিশাল ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়।

মিলাদ-কিয়াম শেষে মাননীয় প্রধান মেহমান দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর সুখ, শান্তি-সমৃদ্ধি এবং কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত শায়খ ছৈয়্যদ গাউছুল আজম রাদিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!