মোঃশরীফ আহমেদ স্টাফ রিপোর্টার:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন আলহাজ্ব শবনম খন্দকার বাবু।

উচ্চ মাধ্যমিক পড়ালেখার শেষ করে চাকরিতে না ছুটে নতুন কিছু করার আসা জাগে তার মনে, তাইতো সবাই যখন চাকরি খুজেন তখন তিনি উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন বনেন। স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে কয়েকজন বন্ধু মিলে ২০০০ সালে ক্ষুদ্র আকারে গুদামজাত ব্যবসা শুরু করেন, মৌসুমী ফসল যেমন, ধান, সরিষা, পাট, গোম, পেয়াজ, রসুন, সহ নানা মৌসুমী ফসল গুদামজাত করতেন, গুদামজাত পণ্যের দাম বৃদ্ধি হলে সেগুলো বিক্রি করতেন ব্যবসায় যতটুকু লাভ হতো তাতে কোন মতন সংসার চলতো সবার। 

উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন থাকলেও স্বাদ আছে সাধ্য ছিল না সময়টা ছিল দুর্ভিক্ষময়। ২০০২ সালে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আধুনিক পদ্ধতিতে অনেকেই মাছ চাষ সুরু করছেন, তখন তিনি তাদের সাথে পরামর্শ করেন। পরামর্শ পেয়ে নিজের উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে মাছ চাষ শুরু করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে ছোট ছোট কিছু কুকুর ৯ থেকে ১০ বিঘা হবে লিজ নিয়ে শুরু করেন মৎস্য চাষ। এমন অল্প জলাশয় দেখে অনেকেই তাকে হেও প্রতিবর্ণ করতেন, অনেকেই বলতেন লেখাপড়া করেছ চাকরি না করে হয়েছে জেলে, কিন্তু বাবুর সে সময় তাদের কথা না শুনে নিজেকে মৎস্য চাষী জেলে ভেবে শ্রমিক ও মালিক নিজেই হয়েছিলেন। মৎস্য চাষের পাশাপাশি উপজেলা মৎস্য চাষীর ট্রেনিং নিয়ে, সকল চাষীদের পরামর্শ গ্রহণ করেন মোটামুটি অভিজ্ঞতা অর্জন করে, সেই অভিজ্ঞতা আর নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা এই সাহস নিয়ে তার নিজের ব্যবসায় কাজে লাগালেন। এতে দেখতে শুরু করলেন সাফল্যের মুখ পরে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

এরপর পেরিয়ে গেছে দীর্ঘ ২০ বছর এখন তার প্রকল্পে জীবন-জীবিকা নির্ভর করে শতাধিক শ্রমিকের। এসব প্রান্তিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করায় এলাকায় এখন সে অনুকরণের দৃষ্টান্ত সফল উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন। এ গল্প সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার 5 নং নওগাঁ ইউনিয়নের মাটিয়া মালি পাড়া গ্রামের মৃত হায়দার আলী খন্দকার এর বড় ছেলে আলহাজ্ব শবনম খন্দকার বাবুর।

বাবুর জীবনের ভাগ্য বদলের সংগ্রামে তার লিজ কৃত জলাশয় ৩০০ থেকে ৩৫০ বিঘায় পরিণত হয়েছে, তাতে বিনিয়োগ করেছেন প্রায় তিন থেকে সোয়া তিন কোটি টাকা। ইতিমধ্যে তিনি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে পেয়েছেন বিশেষ সম্মাননা পদক।

একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে আলহাজ শবনম খন্দকার বাবু জানান, আজকের এই সফলতার পেছনে রয়েছে আমার সততা বিশ্বাস ও শ্রম মেধা এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও মৎস্য চাষীদের আন্তরিক সহযোগিতা। মৎস চাষের পাশাপাশি আমার ফিসফিডের ডিলার নেয়া আছে খুচরো পাইকারি বিক্রি করতে পারি, ও আমার নিজের পুকুরে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ মেট্রিক টন খাদ্য লাগে। এবং আমি এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে নিজের সাধ্যমত সহযোগিতা করে আসছি, আমি মানুষের ভালোবাসা নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই। এবং শুধু জেলা উপজেলা নয় বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের সম্মাননা পদক পাওয়ার আশা রয়েছে আমার মনে।

তাড়াশ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মশগুল আজাদ জানান, তাড়াশে বিভিন্ন মৎস্য চাষি রয়েছে তবে আমি আলহাজ্ব বাবু খন্দকারের মধ্যে ভিন্নতা পেয়েছি, তিনি  খোলা পুকুরে নিরাপদে মাছ চাষ করেন আলহাজ্ব শবনম খন্দকার বাবু, আমি প্রায়ই তার পুকুর পরিদর্শন করি। তিনি খুব আন্তরিকভাবে আমাদের পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং বাস্তবায়নও করেন, একজন সফল মৎস্য চাষী হিসেবে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে সম্মাননা পদক পেয়েছেন মৎস্য চাষে সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থান পুষ্টি ও চাহিদাতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে জিডিপিতেও।

স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা, মোঃ আব্দুল আজিজ বলেন, জীবন সংগ্রামে সততার সাথে কাজ করলে সফলতা আসবেই, তা প্রমান করেছে আলহাজ্ব শবনম খন্দকার বাবু। একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দেশের উন্নয়নের প্রান্তিক পর্যায়ে বাবু খন্দকারের মত আরো উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসা জরুরি, আমি তার সাফল্যকে শ্রদ্ধা জানাই ও তার মঙ্গল কামনা করি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!