তাহিরপুরে ভারত থেকে কয়লা আনতে গিয়ে নদীতে ডুবে যুবকের মৃত্যু

আমির হোসেন,

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::

 

সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্তের সীমান্ত পিলার ১২০৩ এর এস-থ্রী এলাকার যাদুকাটা নদী দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে কয়লার বস্তা নিয়ে আসার সময় যাদুকাটা নদীতে ডুবে সাব্বির মিয়া(২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে।

 

এ ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল (২৬ জুন রোববার) রাত ৯ টার সময় তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরগড় সীমান্তের মেইন পিলার ১২০৩ এলাকার বারেকটিলা লাউড়েরগড় খেয়াঘাটের উত্তর পাশে যাদুকাটা নদীতে।

 

নিহত সাব্বির উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বড়গুফ টিলা গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে।

 

নিহত সাব্বিরের পিতা আসাদ মিয়া জানান, আজ সকালে সাব্বির সহ ৪/৫ জন মিলে সীমান্তের ওপাড়ে ভারতের ঘোমাঘাট এলাকায় যাদুকাটা নদীতে কয়লা তুলতে যায়। পরে সারাদিন নদী থেকে ৪ বস্তা কয়লা তুলে সাব্বির। পরে

রাত সাড়ে ৮ টার দিকে কয়লার বস্তা গুলো প্লাস্টিকের টাংকিতে বেঁধে পানিতে ভাসিয়ে ভারত থেকে নদী দিয়ে সাঁতিয়ে বাংলাদেশে আসার সময় বিজিবির টহলকারী নৌকা পেরিয়ে বারেকটিলা খেয়া ঘাটের কাছে আসার পর সাব্বির হঠাৎ ডুবে যায়। এ সময় খেয়াঘাটে থাকা লোকজন দেখতে পেয়ে নদীতে প্রায় ঘন্টাখানেক খোঁজাখোঁজির পর রাত ১০ টায় তার লাশ উদ্ধার করে।

 

স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার খাদেমুল ইসলামের যোগসাজশে নদীতে টহলকারী বিজিবি সদস্যদের প্রতি কয়লার বস্তায় ১০০ টাকা করে দিয়ে প্রতিদিনই প্রায় অর্ধশতাধিক লোক অবৈধভাবে কয়লা আনতে যাদুকাটা নদী দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ঘোমাঘাট এলাকায় যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রোববার সকালে প্রায় ৪০/৫০ জন কয়লা শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে ভারতের ঘোমাঘাট এলাকায় যায় কয়লা আনতে। পরে রাতে ভারতের ঘোমাঘাট এলাকায় থেকে কয়লার বস্তা যাদুকাটা নদী দিয়ে টাংকির সাথে বেঁধে নিয়ে আসার পথে নদীতে ডুবে সাব্বিরের মৃত্যু হয়। স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ বিজিবির দায়িত্ব অবহেলা আর গাফিলতির কারণেই অবৈধভাবে যাদুকাটা নদী দিয়ে ভারত গিয়ে কয়লা ও পাথার আনাতে গিয়ে প্রায়ই কেউ ভারতীয় বিএসএফ এর হাতে, কেউ ভারতীয় নাগরিকদের পিটুনিতে আবার কেউ নদীতে ডুবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেকেই জানায়, বিজিবি সদস্যদের লোভের কারণেই আজ ছেলেটার মৃ্ত্যু হয়েছে। শুধু যাদুকাটা নদী দিয়েই নায়! শাহ আরেফিন( রঃ) মাজার এলাকার কাঠাল বাগান এলাকা দিয়েও প্রতিদিন শতাধিক কয়লা শ্রমিক ভারতের ভিতরে যায় কয়লা আনতে। পরে ওইসব কয়লার বস্তা সীমান্তের কাছাকাছি করব স্থান এলাকায় এনে মজুদ রাখে মোটরসাইকেল যোগে লাউড়েরগড় বাজারের দক্ষিণে নদীর পাড়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের ডিপুতে রাখা হয়।

 

এ ব্যাপারে লাউড়েরগড় সীমান্ত ফাঁড়ির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার খাদেমুল ইসলাম বলেন, ভাই আমি ভারতে লোক দেয়ার লোকনা। আমি কোন টাকা খাইনা। বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ছেলেটা বারেকটিলার উপর দিয়ে কাটা তারের ভেড়ার পাশ দিয়ে কয়লা আনতে ভারতে গেছে। পরে বিজিবি যাতে না দেখে প্লাস্টিকের বড় টাংকিতে বেঁধে মাঝ নদী দিয়ে নিয়ে আসার সময় প্রবল স্রোতে পরে নদীর মাঝে ভেসে আসা বড় গাছের সাথে বারি( ধাক্কা) খেয়ে ডুবে যায়। পরে তার আত্নীয় স্বজন খবর পেয়ে আসে তার লাশ উদ্ধার করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!
%d bloggers like this: