জেপুলিয়ান দত্ত জেপু

চট্রগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার তেমুহানী এলাকার মৃত হৃদয় রন্জন দাশের পরিবার মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে বছরের পর বছর দিন কাটাচ্ছে। অসহায় ওই পরিবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও ন্যায় বিচার পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মৃত হৃদয় রন্জন দাশের মেঝো ছেলে রতন কান্তি দাশ।

জানা গেছে,সাতকানিয়া উপজেলার তেমুহানীর মৃত নারায়ন চন্দ্র দাশের ছেলে মৃত হৃদয় রন্জন দাশের স্ত্রী ও তিন সন্তানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দ্বায়ের করে বছরের পর বছর হয়রানি করছে হৃদয় রন্জন দাশের আপন ভাই মধু সুদন দাশ। মামলাবাজ মধু সুদন দাশ বাদী হয়ে ১৩৯ জনকে আসামী করে সাতকানিয়া সিনিয়র জজ আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দ্বায়ের করে।

মামলার আর্জিতে জানা যায়,সাতকানিয়া উপজেলার তেমুহানী মৌজার আর,এস ৬৫০/৬০৭/১৬৮/৪০৯/১৬৬/১৬৪/৯৪৪ নং খতিয়ানাদি ৩.৭১ একর জমিতে নারয়াণ চন্দ্র দাশ আর,এস খতিয়ান ভুক্ত বিগত ১১ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৯ ইং তারিখে ৯৫৮/৯৬০ নং কবলা মূলে উক্ত জমি ক্রয় করে দখলে থাকেন। নারায়ণ চন্দ্র দাশের দুই সন্তান হৃদয় রন্জন দাশ ও মধুসুদন দাশ। মধুসুদন দাশ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পিতা নারায়ন চন্দ্র দাশ বেঁচে থাকা অবস্থায় গোপনে ভূঁয়া জাল দলিল তৈরি করে নেয়। সেই থেকে মধুসুদন দাশ ভাই মৃত হৃদয় রঞ্জন দাশেরসাথে ভাল সম্পর্ক রেখে জমি দখল করে রাখে।

অপর দিকে নারায়ণ চন্দ্রের সম্পর্কে বোন শ্যামা সুন্দরী নামক এক মহিলা থেকে আড়াই কানি জমি ১৯৬৭ সালে ক্রয় করেন মৃত হৃদয় রন্জন দাশ । ওই সম্পত্তি বিগত ৫৫ বছর ধরে মধু সুদন দাশ জোরপূর্বক দখলে রেখেছে। এর মধ্যে হৃদয় রন্জন দাশের তিন সন্তান শেখর কান্তি দাশ,রতন কান্তি দাশ ও অন্তর কান্তি দাশ বর্তমানে পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে আইনগত ভাবে দাবী করলে মধু সুদন দাশ ভয়ভীতি দেখিয়ে জবর দখল করে রেখেছে। উল্টা হৃদয় রন্জন দাশের স্ত্রী ও তিন সন্তানকে আসামী করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে মধু সুদন দাশ ভূঁয়া জাল দলিল সৃষ্টি করে ভাই হৃদয় রন্জনের অংশ তার তিন সন্তান শেখর কান্তি দাশ,রতন কান্তি দাশ ও অন্তর কান্তি দাশ কে মধু সুদুন প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে।

মধুসুদন ভূঁয়া জাল দলিল তৈরি করে পৈত্রিক সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার হীন প্রচেষ্টায় তার ভাই হৃদয় রন্জন দাশ ও তার সন্তান শেখর কান্তি দাশ,রতন কান্তি দাশ ও অন্তর কান্তি দাশের সহায় সম্পত্তি ভোগ দখল করার জন্য হৃদয় রন্জন দাশসহ হৃদয় রন্জন দাশের স্ত্রী অর্পনা রানী দাশ ও তার তিন পুত্র সন্তানকে আসামী করে সাতকানিয়া ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা মামলাও দায়ের করে, যার মামলা নং২৪৩/০০৯ ইং। এ ছাড়াও হৃদয় রন্জন দাশের তিন পুত্রকে আসামী করে অতিরিক্ত আদালতে অপর একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে মামলাবাজ মধুসুদন দাশ। যার নম্বর ৩০/২০২২ইং।

নিজ ভাইয়ের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল ও আত্মসাৎ করার জন্য হীন মানসিকতার পরিচয় দিয়ে মধুসুদন দাশ স্থানীয় ভাড়াটে সন্ত্রাসী দিয়ে মৃত হৃদয় রঞ্জন দাশের তিন সহোদরকে বিভিন্ন সময় পিটিয়ে আহত করার অভিযোগও তুলেন মৃত হৃদয় রঞ্জন দাশের পুত্র রতন কান্তি দাশ।

তিনি আরো জানান,মধু সুদুন দাশের লেলিয়ে দেওয়া স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ভয়ে আইনের আশ্রয় নিতে পারছে না তিন সহোদর। আইনের আশ্রয় নিলে তিন সহোদর শেখর,রতন ও অন্তরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। ফলে তারা আইনের আশ্রয় নিতেও ভয় পাচ্ছে।

এদিকে, নিজের মায়ের পেটের ভাই হয়ে এ মিথ্যা মামলা কেন করতে পারল, এই টেনশনে হৃদয় রন্জন দাশ স্ট্রোক করে বিগত ৭ জুলাই ২০২১ সালে মৃত্যু বরণ করছে বলে হৃদয় রন্জন দাশের ২য় পুত্র রতন কান্তি দাশ এ প্রতিনিধিকে অভিযোগে জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মধুসুদন দাশ একজন মামলা বাজ,ফ্রট ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তার আপন ভাইয়ের সন্তান শেখর কান্তি দাশ, রতন কান্তি দাশ ও অন্তর কান্তি দাশকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। ফলে তিন সহোদর নিরাপদে এলাকায় বসবাস করতে না পেরে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে।
১৯৬৫ সালে মৃত হৃদয় রন্জন দাশের ক্রয়কৃত ৪২৮৭ নং বিএস দাগের বিএস খতিয়ান ৮৬১৩১ এর দেডকানি জমি ও সারেছয় গন্ডা বসতভিটা মধু সুদন দাশের দুই সন্তান মিশন দাশ ও পলাশ দাশ প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে গরুর খামার তৈরি করে দখলে রেখেছে। দখল করা জমি ও বসত ভিটা অবৈধ ভাবে দখলে রাখার জন্য উল্টো মধুসুদন দাশ ২০০৯ সালে সহকারী জজ আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে।

এ ব্যাপারে মিশন দাশ ও পলাশ দাশের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া কেঁওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগও দায়ের করেন মৃত হৃদয় রন্জন দাশের মেঝো সন্তান রতন কান্তি দাশ।

অসহায় মৃত হৃদয় রন্জন দাশের সন্তান শেখর কান্তি দাশ,রতন কান্তি দাশ ও অন্তর কান্তি দাশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!