কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থেকে সাগরে মাছ ধরতে গিয়ে মো. রমজান আলী (৩৫) নামের এক জেলে নিখোঁজ হয়েছে। গত ৫ জানুয়ারি থেকে নিখোঁজ হওয়া জেলের এখনও কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। ট্রলারে বাকিরা জীবিত থাকলে এক জনের নিখোঁজ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। তবে পরিবারের দাবী তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভুক্তভোগী রমজান আলীর পরিবার।
নিখোঁজ রমজান আলী(৩৫) উপজেলার বড়ঘোপ ইউনিয়নের রোমাইপড়া এলাকার মৃত শামসুল হকের ছেলে। সে চার সন্তানের জনক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারি রাত ১১ টার দিকে রমজান আলীকে মাছ ধরতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান স্থানীয় কাইমুল বশর, আবুল বশর ও ট্রলারের মাঝি মো. কালু নামের তিনজন ব্যক্তি। কাইমুল বশরের মালিকানাধীন সাগরতরী নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার কথা। মাছ ধরার ট্রলারের ২৭ মাঝিমাল্লার সাথে ছিলেন কাইমুল বশরও। গত ৯ জানুয়ারি ট্রলারসহ বাড়িতে চলে আসনে তিনি। অন্যরা আবারও মাছ ধরতে সাগরে চলে যায়। এরই মধ্যে খবর আসে ট্রলারে মাছ ধরতে যাওয়া ২৭ জনের মধ্যে রমজান আলী সাগরের পানিতে ডুবে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। এখনও তার কোন খোঁজ মেলেনি। তবে রমজান আলীর নিখোঁজ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানান প্রশ্নের ঘুরপাক খাচ্ছে।
নিখোঁজ জেলে রমজান আলীর ছোট ভাই মো. ইয়াছিন বলেন, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়ার আগে ট্রলার মালিক কাইমুল বশরের সাথে বড় ভাই রমজান আলীর বেতন নির্ধারণের বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তিনি তাদের সাথে মাছ ধরতে না যেতে চেয়েছিলেন। নানাভাবে হুমকি দিয়ে ০৫ জানুয়ারি রাত ১১ টার দিকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কথা ছিলো কাইমুল বশরের ট্রলার করে সাগরে মাছ ধরতে যাবে। কিন্তু বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর থেকে আর কোন খবর পাওয়া যায়নি তার। ট্রলার মালিকের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি আমাদের বিষয়টা অস্বীকার করে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুল মালেককে ভাইয়ের নিখোঁজের বিষয়টা অবগত করি। ইউপি সদস্য আবদুল মালেক ট্রলারের মালিক কাইমুল বশরের সাথে যোগাযোগ করে এবং বড় ভাই কোথায় আছে জানতে চাইলে সাগেরর পানিতে পড়ে সে মারা গেছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। ইয়াছিন আরও বলেন, শুরু থেকে বোটের মালিক আমাদের অস্বীকার করে আসছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। আমার ভাইকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ট্রলারের মালিক কাইমুল বশর বলেন, সাগরে মাছ ধরার সময় ট্রলার থেকে পানিতে পড়ে যায় বলে জানিয়েছেন ট্রলারের মাঝি কালু। এখনো রমজান আলীকে সাগরে খোঁজাখুঁজি করছেন ট্রলারে থাকা অন্যরা। তবে এখনও তার কোন খোঁজ মেলেনি। একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে জানান তিনি।
কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম কবির বলেন, নিখোঁজ জেলের ঘটনা নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। পরিবারের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে। সত্যতা পাওয়া গেলে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।