ইসলাম ও আলেম ওলামাদের জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সরকার যা করেছে অতীতে কোন সরকার তা করে নাই; রাঙ্গুনিয়ায় ওলামা মাশায়েখদের সাথে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি শনিবার (৪ জুন) রাঙ্গুনিয়ায় এডভোকেট নুরুচ্ছাফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক, ওলামা মাশায়েখদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন।

মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতির দাবি বহু বছরের পুরনো। বেগম খালেদা জিয়া কিংবা বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখনো এই দাবি ছিল। উনি আলেম-ওলামাদের নিয়ে ভাত খাওয়াতেন, কিন্তু দাবি পূরণ করেননি। আমাদের রাঙ্গুনিয়ার কৃতি সন্তান মাওলানা আহমদ শফী সাহেব আলেম-ওলামাদের নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন, যেনো কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা কওমি সনদের স্বীকৃতি দিয়েছেন।’

তথ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘স্বীকৃতির পর অনেকে বলেছেন, স্বীকৃতি দিয়েছেন, কিন্তু চাকরি হবে না, চাকরি পেলে বেতন পাবেন না। কিন্তু, আমাদের নেত্রী শুধু কওমি সনদের স্বীকৃতি দেননি, তাদের চাকরিও দিয়েছেন। তাঁরা এখন সরকারি বেতন পাচ্ছেন।’

আলেম ওলামাদের উদ্দেশ্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ৫৬০টি মডেল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা কেউ কখনো ভাবেনি। ব্রিটিশ আমলে দেশ বিভক্ত হয়েছিল মুসলমানদের জন্য একটি দেশ, হিন্দুদের জন্য আরেকটি দেশ। সেই পাকিস্তান আমলেও জেলা-উপজেলায় সরকারিভাবে কোনো মসজিদ হয়নি।’

মন্ত্রী বলেন বলেন, ‘আজকে সারা দেশে প্রায় এক লাখ মসজিদভিত্তিক মক্তব করা হয়েছে, রাঙ্গুনিয়াতেও দুই শতাধিক মসজিদভিত্তিক মক্তব প্রতিষ্ঠা হয়েছে। প্রতিটি মক্তবের আলেম পাঁচ হাজার দুইশ টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন। এটি আলেম সমাজ কখনো ভাবেনি। দারুল আরকাম এবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রতিটিতে দুজন করে শিক্ষক বারো হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, এখন হজে যাবার সময় ঢাকায় ইমিগ্রেশন হয়ে যাচ্ছে। সৌদি আরব গিয়ে আগের মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হচ্ছে না।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আলেম ওলামাদের শত বছরের পুরনো দাবি ছিল বাংলাদেশে একটি স্বতন্ত্র ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা। ব্রিটিশ শাসন ভেঙে পাকিস্তান হলো, এরপর বাংলাদেশ হলো, কিন্তু ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় আর প্রতিষ্ঠা হয়নি। জামায়াত ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করল, এরশাদ সাহেব মাওলানা মান্নানকে ধর্মমন্ত্রী বানালেন, কিন্তু ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় হয়নি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকারই ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করল।’

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি লোকমানুল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে ও ধর্মবিষয়ক সম্পাদক জসিম উদ্দিন তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রাঙ্গুনিয়ার বেতাগী দরবার-এ-আস্তানা শরীফের পীর সৈয়দ গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ, মেহেরিয়া মাদরাসার পরিচালক মাওলানা আনাস মাদানী।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের সরকার ইসলামের জন্য এবং আলেম ওলামাদের জন্য যে কাজগুলো করেছে, আলেমরা অন্যদের কাছে তা দয়া করে বলবেন, এই ফরিয়াদ রইলো।’

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, ইউএনও আতাউল গণি ওসমানি, পৌরসভার মেয়র শাহজাহান সিকদার, ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিছ আজগর, ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, রাঙ্গুনিয়া নূরুল উলুম কামিল মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা নজমুল হক নঈমী, রাঙ্গুনিয়া সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. মাওলানা আবদুল মাবুদ, আলমশাহপাড়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, রাণীর হাট আল আমিন হামিদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম আল কাদেরী, খণ্ডলিয়াপাড়া মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা মো. সুলতান, কোদালা মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আবদুল কাদের, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মাওলানা সৈয়দ আইয়ুব নুরী, মাওলানা গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!