*****************************************
স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম।

আগামীকাল ২৯শে অক্টোবর রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে উলিপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দের মধ্যে কোন প্রকার গণসংযোগ কিংবা প্রচার প্রচারণা লক্ষ্য করা যায়নি। বিএনপি অধ্যুষিত এই উপজেলায় বিপুল সংখ্যক কর্মীসমর্থক ও সাধারণ জনগন বিএনপির রংপুর মহাসমাবেশে যোগদান করার উৎসাহ উদ্দীপনা দেখালেও উপজেলা বিএনপি এবং পৌর বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ দলীয় কার্যালয়ের ভিতরে গুটি কয়েক নেতাকর্মী ও অনুসারী নিয়ে দায়সারা আলোচনা করে নিজেদের ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। শেষ পর্যন্ত দায়িত্বশীল নেতাদের কাছ থেকে কোন প্রকার প্রচার প্রচারণা ও গণসংযোগ না থাকায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে তৃনমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা স্ব-উদ্যোগে রাস্তা-ঘাট ও পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে নিজ নিজ দায়িত্বে মহাসমাবেশে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২৯ অক্টোবরের বিভাগীয় সমাবেশ কে সফল করতে উপজেলা নেতৃবৃন্দ কতৃক ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে কোন প্রকার প্রস্তুতি সভা এমনকি প্রচার প্রচারনা ও গণসংযোগ সংক্রান্ত খোলামেলা রাজনৈতিক তৎপরতা না থাকায় হাতাশা প্রকাশ করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বিএনপির সাবেক ও বর্তমানের অনেক ত্যাগী নেতা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন, বিএনপি কোন নিষিদ্ধ সংগঠন নয় যে, রাজনৈতিক কর্মসূচী চার দেয়ালে আবদ্ধ রেখে মুষ্টিমেয় কিছু নেতাকর্মীদের মাঝে তা প্রকাশ করা হবে। বিএনপি জনগনের দল এবং বৃহৎ কর্মী সমর্থক বেষ্টিত একটি জনপ্রিয় সংগঠন। সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এমনকি সাধারন জনগনও বিএনপির এ সকল কার্যক্রম ও কর্মসূচী বিষয়ে জানতে চায়, অংশগ্রহন করতে চায়। অথচ উলিপুরে বিএনপির কর্মসূচীগুলোকে জনগনের কাছে উন্মুক্ত করা হচ্ছে না! উপজেলা বিএনপির সভাপতি হায়দার আলী মিঞা, সাঃ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বুলবুল ও সিনিয়র সহঃ সভাপতি আব্দুর রশীদ মিলিটারি সহ কয়েকজন নেতার উপর সাংগঠনিক অনিয়মের অভিযোগ এনে গত ২০/০৯/২০২২ইং তারিখে দলদলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাঃ সম্পাদক সহ ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড কমিটির এক সঙ্গে ৪২ নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন যা দৈনিক সমকাল এবং ভোরের কাগজ সহ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোরণ সৃষ্টি করে। এসব বিষয় নিয়ে প্রতিটি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা এবং ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রংপুর বিভাগীয় মহাসমাবেশে অংশ গ্রহণ করতে ইচ্ছুক মাঠপর্যায়ের এমন হাজার হাজার কর্মীসমর্থকদের ইচ্ছা ও আগ্রহকে পাত্তা না দিয়ে নিজেদের একান্ত অনুসারী কিছু সংখ্যক নেতাকর্মীদের সমাবেশে পৌছানোর প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে অনুমোদন হীন কমিটির বর্তমান নেতারা।
এমতাবস্থায় হটাৎ আলোকবর্তিকা হয়ে নিজ এলাকা উলিপুর সফর করেন রংপুর বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহঃ সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় মহাসমাবেশের প্রস্তুতি বিষয়ক কমিটির সদস্য জনাব আব্দুল খালেক। যার নেতৃত্বে পুরো রংপুর বিভাগ কে তৃনমুল পর্যায়ে সু-সংগঠিত করা হচ্ছে। বিএনপি সূত্রে জানা যায়, তিনি সরাসরি কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের তত্বাবধানে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের দিক নির্দেশনায় গত ২ বছর থেকে দিনরাত একাকার করে পরিশ্রম করে চলেছেন। আকস্মিক কেন্দ্রীয় এই নেতার উলিপুর আগমনে উজ্জীবিত হয় তৃনমূল। অথপর তার নেতৃত্বে দিনভর উলিপুর উপজেলার সমস্থ ইউনিয়ন এবং পৌর এলাকায় লিফলেট বিতরন, পোষ্টার এবং ব্যানার লাগানো সহ গণসংযোগ করা হয়। যা মূহুর্তেই সাধারণ কর্মীসমর্থক ও জনসাধারণের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি করে। কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপি কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হলেও বর্তমান জেলা সভাপতির নিজ এলাকা উলিপুরে দৃশ্যমান কোন বিভক্তি নেই। তবে এখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত শীর্ষ নেতাদের অগঠনতান্ত্রিক কার্যক্রম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারনে অসন্তোষ, ক্ষোভ ও হতাশা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২৯অক্টোবর রংপুর বিভাগীয় গনসমাবেশকে রাজনীতির গুরুত্বপুর্ন টার্নিং পয়েন্ট বিবেচনায় এই বিভাগের সকল জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীরা জনগনের সর্বচ্চ সংখ্যক উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কাজ করলেও বরাবরের মত জেলা সভাপতি তাসভীর উল ইসলাম বিদেশে অবস্থান করছেন বলে বিএনপির ভিতরেই অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির গ্রুপিং এর কারনে জেলা সভাপতির নিজ এলাকা উলিপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপি অনুমোদনহীন ভাবে মনগড়া কমিটি দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে সাংগঠনিক কার্যক্রম। বিপরীতে জেলা সাঃ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানার নির্বাচনী আসন কুড়িগ্রাম ১ (নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী) উপজেলা কমিটিও সভাপতির সুপারিশ বিহীন হয়ে রাজনৈতিক চর্চা ও কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে অতিদ্রুত জেলা বিএনপির গ্রুপিং নিরসন করে উপজেলা ও পৌরসভা কমিটি সহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সকল কমিটি পূণর্গঠন করে সু-সংগঠিত করা অতি জরুরী বলে মনে করেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ।

অবশ্য স্বপ্রনোদিত ভাবে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন সাবেক নেতাকর্মী কে উলিপুরে রংপুরের এই সমাবেশ কে সফল করতে কাজ করতে দেখা গেছে। তাদের মতে ইতিমধ্যে অনেক সাধারন কর্মী ও সমর্থকরা রংপুর পৌছেগেছেন। আজ ও কালকের মধ্যে আরও কয়েক শত তৃনমুলের কর্মী সমর্থকরা স্ব উদ্যোগে পৌঁছে যাবে বলে ধারনা করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!