সোহেল রানা বাগমারা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারায় মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন আনিকা (১৮) নামের এক কলেজ ছাত্রী।
বর্তমানে রাজশাহীর রয়েল নামের বেসরকারী একটি হাসপাতালের ৬১৭ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন
অবস্থায় রয়েছে। অর্থ সংকটে থেমে গেছে ওই ছাত্রীর চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমও। মামলা
ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর হাট গাঙ্গোপাড়া বাজার
থেকে প্রাইভেট শেষে বাসায় ফিরছিলেন ঐ ছাত্রী ফেরার পথে শ্রীপুর রামনগর ডিগ্রী কলেজের
বাংলা বিভাগের প্রভাষক আনোয়ার হোসেন ওই ছাত্রীর পথরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি
দিয়ে লাঞ্ছিত করে।
শিক্ষকের লাঞ্ছিতের ঘটনা সইতে না পেরে বাসায় এসে ঐ ছাত্রী আত্মহননের উদ্দেশ্যে হারপিক পান
করেন। এরপর শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে ঐ ছাত্রী। এ ঘটনায় ছাত্রীর পিতা বজলুর রশিদ
বাগমারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। ছাত্রীর বাড়ি উপজেলা শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের
বসন্তপুর গ্রামে। পিতার সহায় সম্পত্তি না থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে উন্নত
চিকিৎসা সেবা। আনিকা অসুস্থ থাকা অবস্থায় শ্রীপুর রামনগর ডিগ্রী কলেজ
থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রভাষক আনোয়ার হোসেন কলেজে একাধিকবার ওই
ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। শিক্ষকের দ্বারা শ্লীলতাহানির শিকার হয়ে আত্মহত্যার
চেষ্টা করে আনিকা। প্রভাষক আনোয়ার হোসেন এর বাসা হাট গাঙ্গোপাড়া বাজারে।
ঘটনার পর মেয়ের চিকিৎসায় সর্বস্ব শেষ করেছে ভূমিহীন পিতা। অর্থ না থাকায় ঠিক
মতো চিকিৎসা করাতে পারছেন না বজলুর রশিদ। মৃত্যুযন্ত্রণায় এখন হাসপাতালের বেডে
কাতরাচ্ছেন আনিকা।
এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনার কয়েক দিন পর এলাকাবাসী ঐ শিক্ষক ও মেয়ের বাবাকে নিয়ে
মীমাংসার জন্য বসেছিলেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় ছাত্রীর চিকিৎসার সমস্ত ব্যয়ভার বহণ
করবে ওই শিক্ষক। এ সময় ছাত্রীর পিতাকে ৫ হাজার টাকা দিলেও আর কোন টাকা দিবেন না
বলে অস্বীকৃতি জানিয়েছে শিক্ষক আনোয়ার হোসেন।
ওই ঘটনায় বজলুর রশিদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে মেয়ের নির্যাতনের
সুবিচার চেয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এখন পর্যন্ত সে অভিযোগের
কোন সুরাহা হয়নি। এদিকে থানায় দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের দায়িত্ব
দেওয়া হয় হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আব্দুল মজিদ এর উপর। থানা
পুলিশের তদন্তে স্থানীয় ভাবে মিমাংসা না হওয়ায় গত ১১ জানুয়ারি রাজশাহীর মহামান্য
আদালতে আনোয়ার হোসেনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন বজলুর রশিদ।
মেয়ের উপরে শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতনের সুবিচারের দাবী করেছেন বজলুর রশিদ। তবে
আসামী আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ সম্পর্কে কোনো
কথা বলতে রাজি হয়নি। অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল মজিদ বলেন, আমি
ওসি স্যারকে সব বলে দিয়েছি নতুন করে বলতে চাই না। কিছু জানতে হলে ওসি স্যারের
কাছ থেকে জেনে নেন। শ্রীপুর রামনগর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম বলেন,
ঘটনার সময় আমি দেশে ছিলাম না। তবে দেশে এসে ঘটনার কথা শুনেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!