রুহুল আমিন চৌধুরী (শাবিপ্রবি সিলেট) :

গতকাল ৭ ই এপ্রিল ২০২৩ইং তারিখে সিলেটে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ”-শাবিপ্রবি শাখা’র ২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষিত হয়।এতে ফেরদৌস আহমদ কে সভাপতি এবং রুহুল আমিন চৌধুরী কে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত করা হয়।নব নির্বাচিত কমিটির অন্যান্য সদস্য বৃন্দ হলেন–
সহ সভাপতি মোঃ রাকিব হোসেন ও ফাহিদুল ইসলাম খাঁন,সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফয়জুর রহমান,কোষাধ্যক্ষ রাজন সরকার,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনসুর আলম নিরব ও তাওহীদুল ইসলাম চৌধুরী,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ,দপ্তর সম্পাদক টিপু মিয়া, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ লুৎফুর রহমান, নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক লুৎফুন্নাহার লোনা,তরুন প্রজন্ম বিষয়ক সম্পাদক জুয়েল রায়, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোতাহির হোসেন,শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ আতিকুর রহমান শাকিল,প্রচার-প্রকাশনা ও গণমাধ্যম সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শেখ ফরিদ এবং শিক্ষা ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামীম ইসলাম,সদস্যঃ মোঃ মশিবুর রহমান সোহাগ ও শাহ সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
“বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ”- শাবিপ্রবি এর আহ্বায়ক কমিটি কর্তৃক আয়োজিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা অনুষ্ঠান গতকাল শুক্রবার সিলেট সিটি কর্পোরেশন এর ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় ভবনে সম্পন্ন হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মানিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব আজাদুর রহমান আজাদ,প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান জনাব ইকবাল আল আজাদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ” সিলেট বিভাগ এর সমন্বয়কারী ও কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য জনাব বিদ্যা রত্ন রায়। “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ”- শাবিপ্রবি শাখা’র আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব রুহুল আমিন চৌধুরী’র সঞ্চালনায় ও শাবিপ্রবি শাখা’র আহ্বায়ক কমিটি’র আহ্বায়ক ফেরদৌস আহমদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই যথাযথ সম্মানপূর্বক অতিথিদের নিজ নিজ আসন গ্রহণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানানো হয়। অতিথিদের আসন গ্রহণের পর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিদেহী আত্মার প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সদস্য সচিব রুহুল আমিন চৌধুরী। এরপর স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ,চেতনার গুরুত্ত্ব তুলে ধরার পর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়।অনুষ্ঠানটি তিনটি অংশে বিরতিহীন ভাবে সম্পন্ন হয়। মূল অনুষ্ঠানের প্রথম অংশের শুরুতেই পবিত্র কোরআন হতে তিলাওয়াত করেন আহ্বায়ক সদস্য ফাহিদুল ইসলাম খান।তারপর “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ”-শাবিপ্রবি শাখা’র আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ থেকে প্রথমেই শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন আহ্বায়ক সদস্য রাসেল আহমেদ,তারপর শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন আহ্বায়ক সদস্য মনসুর আলম নিরব এবং সর্বশেষ শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ রাকিব হোসেন।শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, চিন্তা-চেতনাই ফুটে উঠেছে, প্রকাশও পেয়েছে “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ” শাবিপ্রবি শাখা’র আহ্বায়ক কমিটি সবার সমর্থনেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি রচিত হয়েছে এবং যোগ্যতা ও দায়িত্ত্ব পালনের ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি তে পদ-পদবী সুনিপুনভাবে দেওয়া হয়েছে।আহ্বায়ক কমিটির পক্ষ হতে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান শেষে অনুষ্ঠানটির প্রথম অংশ সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশে অতিথিবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, চেতনা ও সংস্কৃতির গুরুত্ব অত্যন্ত চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেন। সর্বপ্রথম অতিথিদের পক্ষ হতে বক্তব্য নিয়ে আসেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ” বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ” এর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য জনাব বিদ্যা রত্ন রায়।তিনি প্রধান অতিথি, প্রধান আলোচক, অনুষ্ঠানের সভাপতি ও সঞ্চালক সহ উপস্হিত সকল কে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান।তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু’র আদর্শকে দল-মত নির্বিশেষে লালন করা অত্যাবশ্যক কারণ বঙ্গবন্ধু এদেশের আইকন, তিনি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই বঙ্গবন্ধু উপাধি অর্জন করেছেন তাই বঙ্গবন্ধু বলতে আলাদা কোনো দলকে প্রতিনিধিত্ব করে না বরং বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তারপর বক্তব্য রাখেন উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক,আহ্বায়ক কমিটির বিশেষ আকর্ষণ, সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সম্মানিত চেয়ারম্যান (বীর মুক্তিযোদ্ধা, বার বার নির্বাচিত ইউনিয়ন ও উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম জনাব মোঃ ইউসুফ আল আজাদের সুযোগ্য সন্তান) জনাব ইকবাল আল আজাদ।তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই অনুষ্ঠান আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ” এর প্রশংসা করে বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ” এর সাথে জড়িত, তারাঁ সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বাধাহীন ভাবে। তিনি নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে নতুন শক্তি যোগানোর উদ্দেশ্যে বলেন “বিন্দু থেকেই সিন্ধু’র সৃষ্টি”- অর্থাৎ আজকের নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি আগামী দিনেরই অসাধারণ কিছু। তিনি “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ”- শাবিপ্রবি শাখা’র সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করেন এবং সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মানিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জনাব আজাদুর রহমান আজাদ কে সর্বদা পাশে থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। সর্বশেষ অতিথি’র বক্তব্য রাখেন উক্ত অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ,সম্মানিত প্রধান অতিথি, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মানিত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বার বার নির্বাচিত কাউন্সিলর জননেতা জনাব আজাদুর রহমান আজাদ।তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বাংলাদেশের অতীত ও বর্তমানের সকল দূর্ভাগ্যজনক সময় ও অপ্রীতিকর ঘটনার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে না মানা।তিনি অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক জনাব ইকবাল আল আজাদ কে সম্বোধন করতে গিয়ে বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা যুগ যুগ ধরে সম্মানিত থাকবে কিন্তু নতুন কোনো মুক্তিযোদ্ধা আসবে না। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা বলতে বলতে একসময় চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, পৃথিবীর কি অন্যকোনো রাষ্ট্রনায়ক আছেন যিনি মাত্র সাড়ে সাত মাসের মধ্যে একটি দেশের সংবিধান গড়ে তুলেন? তিনি আরোও বলেন ১৯৭২ সালের সংবিধান ছিল নিঃসন্দেহে একটি নির্ভুল সংবিধান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশক্তি’র গুণাবলি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মনযোগ সহকারে অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি পড়বে সে কোনোদিনও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাইরে যেতে পারবে না এবং বঙ্গবন্ধুর গড়া সংগঠন ‘আওয়ামী লীগ’ থেকে আলাদা হতে পারবে না।তিনি সামগ্রিক ভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গুরুত্ত্ব তুলে ধরে বলেন, “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ”- শাবিপ্রবি শাখায় যেন নব্য কোনো আওয়ামী লীগের ব্যাক্তি স্থান না পায় কারণ নব্য আওয়ামীলীগ নামধারী ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু কে সঠিক ভাবে উপলব্ধি করতে পারবে না।তিনি “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ”-শাবিপ্রবি শাখা’র আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ফেরদৌস আহমদ ও সদস্য সচিব রুহুল আমিন চৌধুরী কে অনুরোধ করেন যে,এ সংগঠনের সকল সদস্যকে দূরবীন দিয়ে যেন নিখুঁত ভাবে পর্যালোচনা করা হয়।তিনি বক্তব্যের শেষভাগে “বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ” শাবিপ্রবি শাখা’র নেতৃবৃন্দদের নিয়ে আগামী ঈদের পরে বড় পরিসরে অনুষ্ঠান করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।তিনি তাঁর বক্তব্যের শেষাংশে শাবিপ্রবি শাখার ২১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্য বৃন্দের নাম ঘোষণা করেন।তারপর অনুষ্ঠানের সভাপতি ফেরদৌস আহমদ এর সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় অংশ সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানের তৃতীয় ও শেষ অংশের শুরুতেই প্রধান অতিথি, প্রধান আলোচক ও বিশেষ অতিথি দের উত্তরীয় পরিয়ে দেন ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির দায়িত্ত্বপ্রাপ্ত নেতৃবৃন্দরা। উত্তরীয় পরিধান শেষে প্রধান অতিথি,প্রধান আলোচক ও বিশেষ অতিথি দেরকে ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির সভাপতি ফেরদৌস আহমদ সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।তারপর নব-ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি কর্তৃক উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ও দর্শকদের মিষ্টি খাওয়ানো হয়।অতিথিবৃন্দ মিষ্টি খাইয়ে দেন নব নির্বাচিত সভাপতি ফেরদৌস আহমদ সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন চৌধুরী সহ কিছু নেতৃবৃন্দদের।অতিথিদেরকেও মিষ্টি খাইয়ে দেন সভাপতি ফেরদৌস আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।তারপরই নবগঠিত পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতৃবৃন্দরা অতিথিদের যথাযথ সম্মানপূর্বক বিদায়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
উল্লেখ্য যে, গত ৮ ই জানুয়ারী ২০২৩ ইং তারিখে এ সংগঠনের আহ্বায়ক কমিটি গঠিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!