বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর ২০২২) বিকেলে আর্মি স্টেডিয়াসে “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালক (অনুর্ধ্ব-১৭)” ও “বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালিকা (অনুর্ধ্ব-১৭)” এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে “বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বালিকা (অনুর্ধ্ব-১৭)” এর খুলনা ও রংপুর বিভাগের মধ্যকার খেলা উপভোগ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন  বাফুফে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নিজ হাতে গড়া বাংলাদেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাফুফে বাংলাদেশের শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো বঙ্গবন্ধুর হাতেই গড়া। ১৯৭৪ সালে ফিফার সদস্যপদ পায় বাংলাদেশ। ছোটবেলা থেকেই দুরন্ত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দারুণ ফুটবল খেলতেন। ভালোবাসতেন গান, কবিতা, চলচ্চিত্র। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে ভারত থেকে এনে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথের কবিতাও তাঁর অনেক ভালো লাগত। বঙ্গবন্ধু ছিলেন তরুণদের আইকন তরুণরা তাঁর মতো হতে চাইতেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের প্রথমদিকে বলা হয়েছে ছোট সময়ে আমি খুব দুষ্টু প্রকৃতির ছিলাম। খেলাধুলা করতাম গান গাইতাম  সেবা সমিতির কাজ করতাম  ফুটবল ভলিবল খেলতাম। খুব ভালো খেলোয়াড় ছিলাম না। তবুও স্কুলের টিমের মধ্যে আমার ভালো অবস্থান ছিল।’ এ গ্রন্থের ১৪ পৃষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু নিজ বয়ানে বলছেন, ‘খেলাধুলার দিকে আমার খুব ঝোঁক ছিল। আব্বা আমাকে বেশি খেলতে দিতে চাইতেন না। কারণ আমার হার্টের ব্যারাম হয়েছিল। আমার আব্বাও ভালো খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি অফিসার্স ক্লাবের সেক্রেটারি ছিলেন। আর আমি মিশন স্কুলের ক্যাপ্টেন ছিলাম। আব্বার টিম ও আমার টিমে যখন খেলা হতো তখন জনসাধারণ খুব উপভোগ করত। আমাদের স্কুল টিম খুব ভালো ছিল। মহকুমায় যারা ভালো খেলোয়াড় ছিল, তাদের এনে ভর্তি করতাম এবং বেতন ফ্রি করে দিতাম।’ শুধু গোপালগঞ্জে নয়; ৪০-এর দশকে ওয়ান্ডারার্সের হয়ে ঢাকায় গিয়েও ফুটবল খেলেছেন তিনি। সে সময় দেশের সেরা ফুটবলাররাই ওয়ান্ডারার্সে খেলার সুযোগ পেতেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৪০ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত টানা আট বছর ঢাকা ওয়ান্ডারার্সের জার্সি গায়ে স্ট্রাইকার পজিশনে খেলেছেন। ১৯৪৩ সালে বগুড়ায় আয়োজিত একটি ফুটবল টুর্নামেন্টে বঙ্গবন্ধুর অধিনায়কত্বে শিরোপা জিতেছিল ওয়ান্ডারার্স।  বঙ্গবন্ধু যুদ্ধবিধ্বস্ত, সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশেও খেলাধুলাকে ভুলে থাকেননি। ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন করেন। বাংলাদেশে ঘরোয়া খেলাধুলার শুরু তখন থেকেই। আর্থিক সংকটের মধ্যেও দেশের খেলাধুলার অবকাঠামো উন্নয়নে সাধ্যমতো চেষ্টা করে যান বঙ্গবন্ধু। দেশের শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো তাঁর হাতেই গড়া। ১৯৭৪ সালে তো ফিফার সদস্যপদ পায় বাংলাদেশ।
১৯৭২ সালে কলকাতা মোহনবাগান দল ঢাকা একাদশ ফুটবল দলের সঙ্গে ফুটবল খেলতে ঢাকা সফর করে। বঙ্গবন্ধু সেদিনও খেলা শুরুর আগে মাঠে উপস্থিত হয়ে খেলোয়াড়দের উৎসাহ জুগিয়েছিলেন। বাংলাদেশ দল দেশের মাটিতে সেদিন সালাউদ্দিনের দেওয়া ১-০ গোলে জয়লাভ করে। ১৯৭৩ সালেও বঙ্গবন্ধু কলকাতা মোহনবাগান ও ঢাকা একাদশ দলের খেলা উপভোগ করেন স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকে। ১৯৭৩ সালে ঢাকা স্টেডিয়ামে রাশিয়ান মিনস্ক ডায়নামো বনাম বাংলাদেশ একাদশ দলের মধ্যে ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু সেদিন তাঁর ডানদিকে শেখ রাসেল, বাঁ দিকে তাজউদ্দীন আহমদসহ তাঁর মন্ত্রিপরিষদ সদস্যদের নিয়ে গ্যালারিতে বসে খেলা উপভোগ করেছিলেন। পরের বছর (১৯৭৪ সাল) বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামালের গড়া দল আবাহনী আইএফএ শিল্ড টুর্নামেন্ট খেলতে যায় কলকাতায়। বঙ্গবন্ধু তাদের এই যাত্রার প্রাক্কালে আবাহনীর খেলোয়াড়, কোচ, কর্মকর্তা প্রমুখকে বঙ্গভবনে ডেকে নিয়ে তাদের শুভেচ্ছা জানান। একইভাবে ১৯৭৫ সালে মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে খেলতে যাওয়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের গণভবনে ডেকে নিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, ‘খেলায় জয়লাভের চেয়েও দেশের মান-সম্মান অনেক বড়।’ তাঁরা যেন এমন আচরণ না করে, যাতে দেশের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়। তিনি সেদিন খেলোয়াড়দের কঠোর অনুশীলনেরও তাগিদ দিয়েছিলেন এবং খেলাধুলার সার্বিক মান উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর সরকারের নানা পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টার কথাও তুলে ধরেছিলেন। শুধু বঙ্গবন্ধুই নন বঙ্গবন্ধুর উত্তর প্রজন্মের সদস্যরাও এ দেশের ক্রীড়াকে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর অবস্থায় নিয়ে যেতে অবদান রেখেছেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রজননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোমান মৃধা রুবেল বাংলাদেশ প্রতিনিধি প্রতিবেদক বাংলাদেশ রাষ্ট্রজননী দেশরত্ন শেখ হাসিনার তৃণমূল নেতাকর্মী জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!