সিরাজগঞ্জের তাড়াশে তালম ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার ও ভিজিটর শূন্য রয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ওই ইউনিয়নের প্রায় হাজার হাজার মানুষ। বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও শিশুরা স্বাস্থ্য সেবা না পেয়ে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা। ফলে তাদের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে আসতে হচ্ছে উপজেলা সদরে। এতে তাদের ভোগান্তি বাড়ছে চরমে।
 এ দিকে ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বারুহাস ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসার মেহেদী হাসানকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হলেও তিনি সপ্তাহে একদিন সেবা দিয়ে থাকেন ওই কেন্দ্রে।
গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কেন্দ্রেটি তালা বদ্ধ। অনেক সময় পর দেখা মেলে আছিয়া খাতুন নামের এক আয়ার। তিনি বলেন, আমি ছাড়া কোন ডাক্তার ও ভিজিটর এখানে কর্মরত নেই। 
অথচ ওই স্বাস্থ‌্য কে‌ন্দ্রে একজন ডাক্তার, একজন ভি‌জিটর, একজন স্বাস্থ‌্য সহকারী ও একজন আয়ার পদ র‌য়ে‌ছে।
জানা গেছে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র বিনা মূল্যে ঔষধ বিতরন, গর্ভবতী সেবা, নব দম্পতি সেবা, শূন্য থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের চিকিৎসা, বিবাহিত মহিলাদের কপারটি পড়ানো, আই ও ডি, নর প্লান্ট, জনসংখ্যা বৃদ্ধি হ্রাসে পরামর্শ ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস সহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু নিয়মিত ডাক্তার ও ভিজিটর ও স্ব্স্থ‌্য সহকারী না থাকায় তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্বাস্থ‌্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ছেলেসহ চিকিৎসা নিতে আসা গোন্তা গ্রামের ছবিরণ খাতুন জানান, আমার শিশু বাচ্চার চিকিৎসার জন্য ১০টা থেকে বসে আছি, এখন প্রায় ১২টা বাজে। কিন্তু কোন রুম এখনো খোলা হয়নি এবং কোন ডাক্তারও নেই ।
বারুহাস ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসার মেহেদী হাসান জানান, আমি সপ্তাহে ১ দিন ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসা সেবা দেই। এটা আমাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু ছয় দিনের সেবা এক দিনে দেয়া সম্ভব হয় না।
তালম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল খালেক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোন নিয়মিত চিকিৎসক ও ভিজিটর না থাকায় ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানান, তালম ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ উপজেলার সকল স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জনবল সংকট রয়েছে। ফলে সার্বিক ভাবেই সারা উপজেলায় স্বাস্থ্য সেবা কিছুটা হলেও ব্যাহত হচ্ছে। তবে উপর মহলে জনবল চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। দ্রুতই এ সমস্যা কেটে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!