আব্দুল কাদের, কালাই:

জয়পুরহাটের কালাই থানায় এক শিক্ষকের মধ্যে বিরোধ মীমাংসা করে দেওয়ার নামে থানায় ডেকে আব্দুল কাদের (৩৩) নামে ঐ শিক্ষক কে ভয় দেখিয়ে ৩ টি চেকে ও ৯টি ষ্ট্যম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের আলোকে থানায় ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ০৩ টি চেকে ১২,০০,০০০/- (বারো লক্ষ) টাকা ও ০৯টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয় বলে অভিযোগ কালাই থানার এসআই জুবায়ের বিরুদ্ধে। গত ০৩ বছর পূর্বে ‘সবুজ বাংলা উন্নয়ন কর্মসংস্থার সভাপতি সংস্থার সেবামূলক কার্যক্রম চালাতে গিয়ে অর্থের প্রয়োজনে দাদন ব্যবসায়ী ব্যক্তির নিকট থেকে সর্বমোট ৬,৮০,০০০/- (ছয় লক্ষ, আশি হাজার) টাকা সবুজ বাংলা উন্নয়ন কর্মসংস্থার নামে গৃহিত হয় মর্মে গত ০৫-০৬-২০২২ তারিখে বৈকাল অনুমান ৫ ঘটিকার সময় কালাই থানার এসআই জুবায়ের হোসেন বিবাদি যোবাযের হোসেনের বাড়িতে গিয়ে বলেন আপনাদের নামে অভিযোগ আছে। এসআই জুবায়ের হোসেন বলেন অদ্যই রাত ৮.০০টায় আপনারা কালাই থানায় আসবেন, জৈনক শিক্ষক আঃ কাদের আইনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে থানায় হাজিরা দেই। তখন কালাই থানার এসআই জুবায়ের হোসেন বলেন, তোমরা উক্ত ব্যক্তির নিকট থেকে ৬,৮০,০০০/- (ছয় লক্ষ, আশি হাজার) টাকা নিয়েছেন প্রশ্নে কাদের বলেন জ্বি ভাই আমরা নিয়েছি এবং বলি টাকা আমরা দিবো বলা শর্তেও এসআই জুবায়ের হোসেন বলে বেটা তোদের এখানেই সুদের টাকা দিতে হবে আসল টাকার ব্যাপারে ব্যবস্থা পরে নিচ্ছি।

দাদন ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম, পিতা রমজান আলী, এমদাদুল হক, পিতা ইয়াকুব আলী, পিতা ছামছুল হক, আনিছার রহমান, রুবেল মিয়া, পিতা খোরশেদ আলী, সর্ব সাং- সুড়াইল, থানা: কালাই, জেলা: জয়পুরহাট।

তাদের মুনাফার টাকা প্রতি মাসে ৩% হারে অর্থাৎ ০১ লাখে ৩,০০০/- (তিন হাজার) টাকা করে গত ০৩ বছর পর্যন্ত যাবত মুনাফা দিয়ে আমরা সর্বশান্ত হয়েছে। কিন্তু সারাবিশ্বে মহামারি করোনার কারণে ৪/৫ মাস মুনাফা না দিতে পারার কারণে তাদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেয়।

ইতিপূর্বে সবুজ বাংলা উন্নয়ন কর্মসংস্থার নামে গণ্যমান্যদের বলি করোনার কারণে তাদেরকে ৪/৫ মাস কোন মুনাফা দিতে পারিনি। তখন এসআই জুবায়ের হোসেন ভয়ভীতি দেখিয়ে সাদা স্ট্যম্পে স্বাক্ষর দিতে হবে আব্দুল কাদের বলেন সাদা স্ট্যম্পে কেন স্বাক্ষর দিবো তখন এসআই জুবায়ের হোসেন সংস্থার সভাপতি যোবায়েরকে এসআই জুবায়ের ভুক্তভুতিকে থাপ্পর মেরে মাথার পিছনে আঘাত করে হাজতে ১০ মিনিট আটক রাখেন এবং ওসি এসআই জুবায়েরকে বলে আপনি দরবার চলাকালীন সময়ে তাকে কেন হাজতে রাখলেন। পরে বাহিরে ঢেকে বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর ভয়ভীতি দেখিয়ে এসআই জুবায়ের হোসেন ৩টি চেকে ১২,০০,০০০/- (বারো লক্ষ) টাকা ও ০৯ টি সাদা স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন তখন ভুক্তভুক্তি যোবায়ের হোসেন ও আব্দুল কাদের বলেন, আমরা আগামী ০১ বছরের মধ্যে ১ম পক্ষের সমূদয় টাকা পরিশোধ করবো মর্মে কয়েকবার দরবার হয়েছে বললে তিনি না মেনে তাদের নিকট থেকে তিন জনের কাছ থেকে ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় ও আব্দুল কাদের এর নিকট থেকে ০৩ টি চেকে স্বাক্ষর করে নেন। ১ম পক্ষের বাদিগণের সাদা স্টাম্পে কোন স্বাক্ষর নেই।

এসআই জুবায়ের হোসেন বলেন, আজ রাত বেশি হওয়ায় আগামীকাল তোমাদের লিখিত স্ট্যাম্পের ফটোকপি দেওয়া হবে। কিন্তু আদৌও এসআই জুবায়ের হোসেন এর নিকট আমরা নিজেরা, জেলা, উপজেলা থেকে সাংবাদিকগণের নিকট সব কিছুই অস্বীকার করেন।

জানতে চাইলে বাদি পক্ষের রবিউল ইসলাম বলেন, সবুজ বাংলা উন্নয়ন কর্মসংস্থা থেকে ৬,৮০,০০০/- (ছয় লক্ষ, আশি হাজার) টাকা আমরা পাবো। তারা দিতেও চাইছে কিন্তু আমরা না মেনে অন্যায়ভাবে কাদের নিজ নামীয় ৩টি চেকে ১২,০০,০০০/- (বারো লক্ষ) টাকা ও ০৯টি সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। যাহা কালাই থানার ওসি এসএম মুদ্দীন স্যারের নিকট জমা থাকবে। তাহার কল রেকর্ডটি সংরক্ষণ রয়েছে।

ভুক্তভোগী আব্দুল কাদের বলেন, বিরোধ মীমাংসার নামে থানায় ডেকে নিয়ে ভয়ভীতি ও বলপ্রয়োগ করে স্বাক্ষরিত চেক ও স্টাম্প আমার কাছ থেকে নিয়ে নেয়। আমি একজন কেজি স্কুলের স্বল্প বেতনে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার বাবা নেই, ঘরে আমার বিধবা মা ও স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে দুবেলা-দুমোঠো খেয়ে দিন চলে মাত্র। এমতাবস্থায়, ন্যায় বিচারের স্বার্থে চেক ও স্টাম্প ফেরত দানে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি এবং সময় মতো তাদের টাকা ফেরত দিবো।

বিরোধ মীমাংসার বিষয়ে জানতে চাইলে এসআই জুবায়ের বলেন উভয় পক্ষকে ডেকেছিলাম মাত্র। আভিযোগের আয়ু ছিলাম আমি পরের দিন শালিশে ছিলাম না। আহম্মেদাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলো তারা বলতে পারবে। আমি কিছুই জানি না।

উক্ত বিষয়ে আহম্মেদাবাদ চেয়ারম্যান আলি আকবর
বলেন আমি বাসের মধ্য আছি। এখন কিছু বলতে পারবো না। পরবর্তীতে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন না।

কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম মঈনুদ্দীন বলেন, তাদের নামে একটি অভিযোগের আলোকে দরবার করেছি। সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভুক্তভুক্তিদের কাছ থেকে কোন সাদা স্ট্যাম্প বা স্বাক্ষরিত চেক আমার জানা মতে নেওয়া হয় নাই।

বি.দ্র: বাদী রবিউল ইসলাম বলেন, আব্দুল কাদের এর থেকে ৩টি চেকে ১২,০০,০০০/- (বারো লক্ষ) টাকা ও সাদা স্টাম্পে ৩ জনের স্বাক্ষর নিয়ে নেওয়া হয়েছে যা কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম মঈনুদ্দীন এর নিকট জমা আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!