
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোবারকপুরে ভূয়া দলিল তৈরি করে জমি জালিয়াতি, হামলা-মামলাসহ বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী একটি অসহায় পরিবার।
জানা গেছে উপজেলার মোবারকপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে মোঃ ইব্রাহিম গণমাধ্যমকর্মীদের লিখিত অভিযোগের মাধ্যমে এ সকল উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়রানির প্রতিকার চেয়ে প্রশাসনের নিকট হস্তক্ষেপ ও সুষ্ঠু বিচারের আবেদন করেন।
ভুক্তভোগী অভিযোগকারী মোঃ ইব্রাহিম লিখিত অভিযোগ করে বলেন গত ০৯/০৭/১৯৭১ ইং সালে আমার পিতা মোঃ আব্দুল হামিদ মোঃ আইনুদ্দিন মন্ডল এর কাছ থেকে গোমস্তাপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের রেজিস্ট্রিকৃত ২২৪৮ নং দলিলে সি.এস ০৯, ও এস.এ ০৬ খতিয়ানে সাবেক দাগ ৮৩৭ নং এ ০৯ শতক, ৮৩৫ দাগে ০৯ শতক ও ৮৩৬ দাগে ৩.৩/৪ শতক একত্রে মোট ২১.৩/৪ শতক জমি ক্রয় করেন।
পরবর্তীতে ২৩/১০/১৯৭২ ইং সালে নবাবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে তার পিতা মোস্তফা আশাদুল্লাহ মিঞার কাছ থেকে সাবেক ৫৫৫৬ দাগে ১৫ শতক ও হাল ১২৭ দাগে ২৬ শতকসহ মোট ৪১ শতক জমি ক্রয় করেন।
পক্ষান্তরে আর.এস রেকর্ড অনুযায়ী মোঃ ইব্রাহিমের পিতা আব্দুল হামিদের নামে মোট ৬২.৯৭ শতক জমি রেকর্ড ঘোষণা হয় ও মোঃ আইনুদ্দিন নামের আরেক ব্যক্তির নামে ২.০৩ শতক জমি রেকর্ড হয়।
আইনুদ্দিন মন্ডলের নামীয় ২.০৩ শতক জমি তার মৃত্যুর পরে দুই কণ্যা সন্তান মোসাঃ জেলেখা বিবি ও মোসাঃ কাঁচুন বিবির নিকট হতে ২৩/০১/১৯৮৪ ইং সালে শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ০২ শতক জমি ক্রয় করেন ইব্রাহিমের পিতা মোঃ আব্দুল হামিদ ।
পরবর্তীকালে ইব্রাহিমকে ২৪/০৫/১৯৯২ ইং সালে শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মৌজা- মোবারকপুর, জেল নং ৫৩, আর.এস খতিয়ান নং ১৩, ১০৭২ নং দাগে ০৯ শতক ও ১০৭৩ নং দাগে ১৫ শতকসহ মোট ২৪ শতক জমি হেবানামায় দান করেন জানান তিনি উক্ত জমি ইব্রাহিম শিবগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে খারিজ করেন । যার খারিজ কেস নং ২০৯৮/i x-i/১৪-১৫ যাহার প্রস্তাবিত খতিয়ান নং ৭৬০ অনুমোদিত হয় ২৭/০৪/২০১৫ ইং সালে।
সবকিছু ঠিকঠাকভাবে ভোগ দখল করে আসলে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হয়রানি শুরু করেন প্রতিপক্ষ একটি চক্র৷ মোবারকপুর গ্রামের মোঃ রোজ্জেদ আলী, তার স্ত্রী মোসাঃ রেফুল বেগমকে দিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ-এ ০৬পি/২০১৬ নং একটি মামলা দায়ের করেন। যেখানে ইব্রাহিমসহ মোট ০৮ জনকে আসামী করা হয়। উক্ত দায়েরকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালত আসামী পক্ষকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেন। যেখানে ০৮ জন আসামী খালাস পান ও মামলাটি মিথ্যে প্রমাণিত হওয়ায় খারিজ করে দেন বিজ্ঞ আদালত।
পরবর্তীতে আবারও উদ্যেশ্য প্রণোদিতভাবে মোঃ রোজ্জেদ আলী তার স্ত্রী মোসাঃ রেফুল বেগমের নামে ১৯/১১/২০১৪ ইং সালে শিবগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে অবৈধপন্থায় জালিয়াতির মাধ্যমে ১৩৬৩৪/১৪ নং একটি ভূয়া দলিল তৈরী করেন। যাহা মোসাঃ জেলেখা বিবি ও কাঁচুন বিবির হস্তান্তর যোগ্য নয় বলে নিশ্চিত হয়। যেটা তারা দুই বোন ২৩/০১/১৯৮৪ ইং সালে জমিটি হস্তান্তর করেছিলেন।
বর্তমানে মোঃ রোজ্জেদ আলী তার স্ত্রী মোসাঃ রেফুল বেগমকে দিয়ে উপরোক্ত উল্লেখিত ভূয়া ১৩৬৩৪/১৪ নং দলিলটি দিয়ে আবারও আদালতে মামলা দায়ের করেন৷
উক্ত ভূয়া দলিলটি দ্বারা আদালতে মামলা করার পর পুনরায় আবারও আরেকটি ভূয়া ১৩৬৩৭/১৪ নং দলিল আদালতে উপস্থাপন করেন৷ এরই প্রেক্ষিতে সিনিয়র সহকরী জজ আদালত (শিবগঞ্জ) আংশিক .০৩৭৫ একর জমি ২৮/০৩/২০২১ ইং তারিখে বাদীর পক্ষে রায় দিয়ে দেন।
পরবর্তীতে ঐ রায়ের বিরুদ্ধে ০৪/০৪/২০২১ ইং সালে ইব্রাহিম আপিল করলে আপিলে ১৩৬৩৭/১৪ নং রায় পাওয়া দলিলের জাবেদা কপি সংগ্রহ করতে দেরি হওয়ায় উল্টো মোসাঃ রেফুল বিবির নামে আংশিক রায়টি বহাল থেকে যায়।
অতঃপর পরিশেষে উক্ত দলিলটির জাবেদা কপির নকল সংগ্রহ করে দেখা যায় যে, দলিলটির সাথে তাদের কোন সম্পর্ক বা মিল নেই।
যে দলিলটি উপস্থাপন করে রায় পেয়েছিলেন হয়রানিকারী সেই দলিলটি অন্য একটি ইউনিয়নের যাহা নিম্নে বর্ণিত সকল তথ্য প্রমাণদি উল্যেখ করা হল- দলিলটির গ্রহীতাঃ শ্রী সূর্য চদ্র সাহা, পিতা- শ্রী বসন্ত সাহা, সাং বাবুপুর, ইউনিয়ন- পাঁকা এবং দাতা- মোঃ ইসমাইল হোসেন (দিগর), পিতা- মৃত এসাহাক, সাং- উজিরপুর, ইউনিয়ন- উজিরপুর, মৌজা- বাবুপুর, জেল নং ১২৭, ভলিউম নং ৩৭৯, পাতা ২৪-৩৪ (শিবগঞ্জ) দলিল নং ১৩৬৩৭/১৪ ।
অনুসন্ধানে জানা যায় ভূয়া এ দলিল দ্বারা মোসাঃ রেফুল বিবি আদালতের চোখে ধুলোবালি ছিটিয়ে তার পক্ষে রায় নেন যাহা সম্পূর্ণ জালিয়াতি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ইব্রাহিম। ইব্রাহিম গণমাধ্যমের কাছে সঠিক তদন্ত করে লিখুনির মাধ্যমে প্রশাসনের সুদৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ কামনা করেন৷ তিনি আরও জানান, আমি নিম্ন আদালতে আবারও আপিল করবো তাতে যদি সুষ্ঠু বিচার না পাই তাহলে হাইকোর্টে আপিল করবো।
এব্যাপারে মোসাঃ রেফুল বিবির সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
তাং- ২৭/০৬/২০২২ খ্রি,