
সাইফুল্লাহ নাসির, শরতের শুভ্র কাশফুলে ছেয়ে গেছে বরগুনার আমতলী-তালতলী চরাঞ্চল। অভুতপুর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে দুই উপজেলার নদ-নদী তীরে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে। এ অপার সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমীদের পর্যটনের খোরাক মেটানোর পাশাপাশি হয়ে উঠেছে এলাকার জীবিকার উৎস।
ঋতু বৈচিত্রের এই দেশে ‘ঋতুর বৈচিত্র্য’ অনুভব করতে গ্রামবাংলার প্রকৃতির কোনো বিকল্প নেই। যদিও দিন দিন সেই বৈচিত্র্য হারিয়ে যেতে বসেছে। শীত এবং বর্ষাকাল স্পষ্টভাবে বোঝা গেলেও অন্যান্য ঋতুর বৈচিত্র্য খুব একটা দেখা যায় না। তবে নদ-নদীর চর এলাকা, বিরানভূমিতে কাশফুল ফুটলেই বোঝা যায় শরৎ এসেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, তালতলী আমতলী সড়কের পাশ ঘেঁশে চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, মেঘ যেন মাটি স্পর্শ করছে। বাতাসে ঢেউ তুলছে কাশফুল। দীর্ঘ এলাকা শুধু কাশফুলের শুভ্রতা।
বরগুনার জেলার তালতলী উপজেলায় বিস্তৃর্ণ এলাকাজুড়ে রয়েছে চরাঞ্চল।এ সব চরাঞ্চলে বছরের এই সময়টায় কাশফুলের শুভ্রতায় ছেয়ে যায়। কাশফুল ফুটলেই বোঝা যায় ঋতুর পরিবর্তন।
শরতের এ এক অপরুপ সৌন্দর্য।এ সময় আকাশে ভাসতে থাকে খণ্ড খণ্ড সাদা মেঘ।কখনো দেখা যায় ঝকঝকে নীলাকাশে ছোপ ছোপ সাদা মেঘের ভেসে বেড়ানো। শরতে কাশফুলের পাশাপাশি ফোটে ছাতিম ফুল সড়কের পাশে থাকা ছাতিম গাছ ভরে উঠে সাদা সাদা ফুলে। সন্ধ্যা নামলেই ফুল থেকে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র সুগন্ধ! কাশফুল এবং ছাতিম এখনো মনে করিয়ে দেয় ঋতুর বৈচিত্র্য।
এদিকে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এই সময়ে অনেকেই ঘুরতে আসে বিভিন্ন শহর থেকে। মেইন সড়কের পাশে ।
কাশ ফুলের সৌন্দর্য মণ্ডিত সড়কের পাশে ঘুরতে আসা তালতলী উপজেলার বাসিন্দা আরিফ বলেন, প্রতিবছর শরতে আমাদের এই সড়কের পাশে প্রচুর কাশফুল ফোটে। কাশফুলের সাদা রঙে চারপাশ ছেয়ে যায়। চমৎকার লাগে দেখতে। সড়কের পাশে অনেক লোকজন আসে ঘুরতে।আমিও প্রতি বছর এ সময়ে এখানে কাশ ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসি।
স্থানীয় কলেজের শিক্ষার্থী শান্তা মারিয়া বলেন,কাশফুল বালু মিশ্রিত মাটিতে প্রচুর জন্মে। সড়কের পাশে তালতলী উপশহরসহ চরাঞ্চল এলাকায় প্রচুর জন্মে কাশফুল। প্রকৃতিতে যে শরত এসেছে, তা কাশফুল না ফুটলে টের পাওয়া যেতো না। শরতের সৌন্দর্যই যেন এই কাশফুল!
এদিকে কাশফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এই সময়ে অনেকেই ঘুরতে আসে। সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা যায় অনেককেই। তিনি আরও বলেন, প্রকৃতির সৌন্দর্যের কোনো তুলনা হয় না। এই কাশফুল প্রকৃতির বুকে ভিন্ন রকম সৌন্দর্য এনে দেয়। কাশফুল দেখলেই বোঝা যায় শরত এসেছে।
স্থানীয় মোঃ ফয়সাল মিয়া বলেন,কাশফুল যেমন সৌন্দর্য বাড়ায়,তেমনি ফুল ঝড়ে যাওয়ার পর কাশফুলের ডগা সংগ্রহ করে ঝাড়ু তৈরি করা হয়। অনেকেই এগুলো কেটে নিয়ে যায়। তাছাড়া বাণিজ্যিকভাবেও এগুলো বিক্রি হচ্ছে।
দলবেধে ঘুরতে আসা কয়েকজন জানান,গ্রামবাংলার প্রকৃতি পাল্টে যাচ্ছে দিন দিন। উজার হচ্ছে গাছপালা। ভরাট হচ্ছে জলাশয়। প্রতিবছরই শুকনো মৌসুমে।এদের কবলে পড়ে কাশফুলও হারিয়ে যেতে বসেছে। অতীতের মতো কাশফুল চোখে পড়ে না বর্তমানে।প্রকৃতিতে শরৎ আসে নতুন রূপ নিয়ে। আর কাশফুল শরতের রূপের মধ্যে অন্যতম। ভোরে হালকা শিশির এবং মাঝেমধ্যে হালকা কুয়াশাভাব জানান দেয় দুয়ারে আসছে শীত।