এম ডি বাবুল সি:বিশেষ প্রতিনিধি

র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কতিপয় ব্যক্তি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানাধীন শুলকবহর এলাকার একটি বাড়ীর ৩য় তলার একটি রুমে বন্য প্রাণী নিধনকৃত হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া সংগ্রহে রেখে বিক্রয় করার চেষ্টা করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল গত ২৬ মে ২০২৩ ইং তারিখ রাত ১০:৩০ দিকে বর্ণিত স্থানে পৌছিলে র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ০১ জন ব্যক্তি কৌশলে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠাকালে র‌্যাব সদস্যরা আসামী মোঃ আব্দুল মালেক (৬৮), পিতা- মৃত হাজী আব্দুল আলী, সাং- দীতেশ্বর, থানা- কমলগঞ্জ, জেলা- মৌলভীবাজারকে আটক করে। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে ধৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে ও দেখানো মতে তার ভাড়াকৃত বসত রুমের খাটের নিচ হতে ০১ টি সাদা প্লাষ্টিকের বস্তার ভিতর হতে ০৪ টি হাতির দাঁত, ছোট বড় ও মাঝারী আকারের ২০ টি হাতির দাঁতের খন্ডাংশ (মোট ১৪ কেজি) এবং ০১ টি হরিণের চামড়া উদ্ধারসহ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে দীর্ঘদিন যাবৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল হতে পারমিট ব্যতিত বন্যপ্রানী (হাতির দাঁত ও হরিণের চামড়া) বিভিন্ন অংশ বিশেষ সংগ্রহ করে পরবর্তীতে তা চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করে আসছে। উদ্ধারকৃত মালামালের আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা।

আটককৃত আসামী আব্দুল মালেককে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তিনি মূলত মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানার বাসিন্দা। তিনি ১৯৭৬ সন থেকে তার বাবার সাথে রাঙ্গামাটি জেলার বাগাইছড়ি এলাকায় হাতি দেখভাল করার জন্য আগমন করেন। তার বাবার কয়েকটি হাতি ছিল। ১৯৯৮ সালে তার বাবা মারা গেলে হাতির ব্যবসা দেখভাল করার জন্য তিনি ছয় বছর যাবত রাঙ্গামাটি জেলার বাগাইছড়ি থানার মরিশ্যা এলাকায় ছিল। তিনি একজন লাইসেন্সধারী হাতির পালক। ২০১০ সালের পরে লাইসেন্স প্রভিশন হলে তিনি পুনরায় লাইসেন্স করেন। তবে তিনি স্থায়ীভাবে তখন বাঘাইছড়ি থাকতেন না, ২/৪ দিন থেকে আবার মৌলভীবাজার চলে যেতেন। তার বৈধভাবে মোট ছোট বড় ১২ টি হাতি আছে। তবে স্থানীয় তথ্যানুযায়ী তার আরো ২৪/২৫টি রেজিষ্ট্রেশনবিহীন হাতি রয়েছে যা দিয়ে তিনি বিয়ে বাড়িতে ভাড়াসহ পাহাড়ি এলাকায় গাছ টানার কাজ করেন। পাহাড়ি এলাকা হতে অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন বন্যপ্রানীর চামড়া, হাতির দাত সংগ্রহ করে অবৈধভাবে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজের হেফাজতে সংরক্ষণ করে আসছিলেন।

গ্রেফতারকৃত আসামী ও উদ্ধারকৃত মালামাল সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!
%d bloggers like this: