রুহুল আমিন,জেলা প্রতিনিধি মানিকগঞ্জ।

মানিকগঞ্জে অল্প সুদে সহজেই ঋণ প্রদান, সঞ্চয়ে অধিক লাভ এবং সদস্যদের সন্তানসহ অসহায় ও দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে পড়ালেখা করানো হবে। এমন প্রলোভনে গ্রাহকের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ফিঙ্কা নামের একটি এনজিও উধাও হয়ে গেছে।

জানা গেছে, হরিরামপুর উপজেলার চালা ইউনিয়নের কালোই মোড়ে পিয়ার আলীর বাড়িতে দুটি রুম ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে ফিঙ্কা ইন্টারন্যাশনাল।

ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, চালা, গালা ও গোপীনাথপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়নের বেশকিছু গ্রামে ফিঙ্কা ইন্টারন্যাশনাল নামের এনজিও’র কয়েকজন ফিল্ড অফিসার মানুষকে সাপ্তাহিক, মাসিক ও বাৎসরিক কিস্তিতে ১০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকার ঋণ দেওয়ার কথা বলে তাদেরকে সদস্য (গ্রাহক) হিসেবে ৫৫০ টাকা নিয়ে ভর্তি করায়। প্রতি লাখ টাকা ঋণের বিপরীতে ১০ হাজার করে সঞ্চয় জমা নেয় প্রতিষ্ঠানটি।

এছাড়াও সঞ্চয়ের টাকায় অধিক মুনাফা প্রদান এবং সদস্যদের সন্তানসহ অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বিনামূল্যে পড়ালেখা করানো হবে বলে প্রলোভন দেখায়। এরপর সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয়ের নামে এবং ঋণের জামানত হিসাবে টাকা নেওয়া শুরু করে। এর মধ্যে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে তারা ভর্তিকৃত সদস্যদের পরিবারের শিশুদের বিনামূল্যে পড়ালেখা করানোর জন্য শিশুদের মাঝে শিশু ও প্রাথমিক শিক্ষার কিছু বই, সিলেট ও চক বিতরণ করে এবং ঋণের জামানত হিসাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে ব্ল্যাংক চেক, পাসপোর্টের ফটোকপি নেয় জমা নেয়।

এভাবে অল্প কয়েকদিনে মধ্যে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা সংগ্রহ করে ‘ফিঙ্কা ইন্টারন্যাশনাল নামের এই এনজিও। ঋণের জামানত নেওয়া গ্রাহকদের মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এদিন গ্রাহকরা কালোই মোড় এলাকায় গিয়ে দেখেন অফিসে কেউ নেই। দুপুর গড়িয়ে বিকাল ও সন্ধ্যা পার হলেও কারও দেখা মেলেনি। কর্মকর্তা মনির সহ অফিসের বাকি কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ।

ফিঙ্কা ইন্টারন্যাশনা নামের এনজিওর হরিরামপুর শাখায় সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ার, টেবিল, কিছু শিশু ও প্রাথমিক শিক্ষার বই ও সমিতির সদস্য ফরম এবং পাশবই একটি মনিটর ছাড়া আর কিছুই নেই। অফিসে কাউকে না পাওয়ায় এবং ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মনিরের মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ থাকায় সংশ্লিষ্ট কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুমন আদিত্য বলেন, ফিঙ্কা ইন্টারন্যাশনাল এনজিওর নামে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ করেছে। তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সোর্স দিয়ে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতে কাজ করছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!
%d bloggers like this: