স্টাফ রিপোর্টারঃ

বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে হেরে গিয়ে ভোটারদের কাছে টাকা ফেরত চেয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম রাজ ওতার এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এঘটানায় ভয়ে ইউপি সদস্যদের অনেকেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচন গত ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে বগুড়া সদর ওয়ার্ডে সদস্য প্রার্থী ছিলেন বগুড়া সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মাহফুজুল ইসলাম রাজ। নির্বাচনে তিনি পান ৪২ ভোট। বিপরীতে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী বগুড়া শহর আওয়ামী লীগের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সার্জিল আহম্মেদ টিপু ১০৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।

বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য মাহমুদা বেগম বলেন, ‘মাহফুজুল ইসলাম রাজকে ভোট দেয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের ৩ জন নারী সদস্যের জন্য আমাকে ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। এ ছাড়া ভোটের কয়েক দিন আগে দুই দফায় আমাকে হাত খরচ বাবদ আরও ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়। রাজ ভোটে হেরে যাওয়ার পর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এনামুল হক রুমী আমাকে ফোন করে টাকা ফেরত দিতে বলেন।’

মাহমুদা বেগম আরও বলেন, ‘আমরা গরীর মানুষ টাকা খরচ হয়ে গেছে। টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে বাড়িতেও ফিরতে সাহস পাচ্ছি না।’ একই ইউনিয়নের আরেক নারী সদস্য রানীমা খাতুন বলেন, ‘টাকা ফেরত না দেওয়ায় আমাকে অপমান অপদস্ত করা হয়েছে। আমি বর্তমানে আমার মায়ের বাড়িতে অবস্থান করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গোপনে টাকা দিয়ে এখন হৈচৈ করে টাকা ফেরত চাওয়া হচ্ছে।’ ইউপি সদস্য মিনহাজুল ইসলাম খান নান্নুও বলেছেন, ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর কাছেও টাকা ফেরত চেয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, মাহফুজুল ইসলাম রাজ ভোটের আগের দিন ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তাদের টাকা দিয়েছেন। অনেক ভোটের ব্যবধানে হেরে যাওয়ার পর তিনি এখন টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বগুড়া সদরের শাখারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক রুমী বলেন, ‘আমি কারো কাছে টাকা ফের চাইনি। কোনো মেম্বর আমার সামনে এসে বলতে পারবে না।’

মাহফুজুল ইসলাম রাজ টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘বগুড়া সদরের কোনো ইউপি সদস্য বলতে পারবেন না, আমি তাদের সম্মানী দেইনি। কিন্তু তারপর ইউপি সদস্যদের অনেকেই দুপক্ষ থেকেই টাকা নিয়েছেন। টাকা নেয়ার পরও আমাকে ভোট দেয়নি অনেকেই।’ তবে নিজে টাকা ফেরত চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে কারও কাছে টাকা ফেরত চাইনি। যাদের মাধ্যমে ইউপি সদস্যরা দুই পক্ষের কাছ থেকেই টাকা নিয়েছে তারা টাকা ফেরত চাইতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!