মোঃ বশির আহাম্মেদ বাকেরগঞ্জ সংবাদদাতা: বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় দুধল ইউনিয়নের গোমা গ্রামের কালাম হাওলাদারে পুত্র মো: জাবের (১৬) সুন্দরকাঠী জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, এই ঘটনায় আজ ২৮ আগস্ট সকালে নিহতের বাড়ির সামনে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা সড়কে জিপিএস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষকের ধাওয়ায় নিহত হওয়ায় বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের লোকজন ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের চাপের মুখে ভুক্তভোগী পরিবার মৃত সন্তানের লাশ দাফন দেওয়ার প্রস্তুতি নেয়। সকাল ১০ টায় ঘটনাস্থলে সংবাদ মাধ্যম উপস্থিত হলে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সাংবাদিকদের বক্তব্য না দেয়ার জন্য নিহত জাবেরের মা রীনা বেগমকে নিষেধ করে। সন্তান হারানোর বেদনায় সকল বাঁধা উপেক্ষা করে নিহতের মা রীনা বেগম সংবাদ মাধ্যমকে জানায়, গত ১৪ আগস্ট আমার ছেলে জাবের সহ তার সহপাঠী কয়েকজন মিলে তাদের বিদ্যালয় বিকেলে পিকনিক করে। ঐ রাতে আমার ছেলে সহ তার বন্ধুরা বিদ্যালয়ে উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্সে গান বাজায়। আশেপাশের লোকজন প্রধান শিক্ষককে ফোন করলে রাত ১১ টায় মোটরসাইকেলে তিনি বিদ্যালয়ে এসে পিকনিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। তখন আমার ছেলে জাবের দৌড়িয়ে পালাতে গেলে বিদ্যালয়ের পাশে থাকা ইটের তৈরি চুলার উপর পড়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ওই রাতে বাসায় আসলে আমার ছেলের কাছে জানতে চাইলে প্রথমে বলে অটো রিক্সা থেকে পড়ে গিয়েছি। তখন আমার ছেলে বারবার বলছিল আমার বুকে ও পেটে প্রচন্ড ব্যথা করছে। আমি ওর গায়ে হাত দিয়ে দেখি অনেক জ্বর। সকালবেলা স্থানীয় ফার্মেসী থেকে ওর জন্য ঔষধ এনে কয়েকদিন খাওয়াই। তারপর আমার ছেলের সুস্থ না হওয়ায় ওকে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। ঐ রাতের ঘটনা এলাকায় ছড়িয়ে পরে আমার ছেলের কাছে যানতে চাইলে তখন আমার কাছে এই ঘটনা আমাকে জানায়। এক সপ্তা চিকিৎসা শেষে গত কাল সকালে জাবেরকে বাড়িতে নিয়ে আসি। বাড়িতে আনার পরে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে সন্ধ্যার পরে প্রধান শিক্ষক মোঃ আহসান হাবিব মোল্লা নিজে ফোন করে একটি অ্যাম্বুলেন্স এনে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতালে নেয়ার পথে আমতলা মোড় পৌঁছালে আমার ছেলে মারা যায়। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হসান হাবিব মোল্লাকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি। পরবর্তীতে স্থানীয়রা বাকেরগঞ্জ থানা পুলিশ খবর দিলে তারা এসে লাশ থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এস এম মাকসুদুর রহমান জানান, নিহত শিক্ষার্থীর লাশ থানায় আনা হয়েছে। নিহত পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে। পুলিশ লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!
%d bloggers like this: