সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় রাতের আধাঁরে বসতঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে পিতামাতাকে মারপিঠ করে আহত করে তাদের মেয়ে অপ্রাপ্ত অষ্টম শ্রেণীর এক সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীকে অপহরন করে নিয়ে গেছে অটোরিক্রা চালক মো. আশকর আলী ও তার সহযোগিরা।
ঘটনাটি ঘটেছে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টায় উপজেলার ৩নং দোয়ারাবাজার ইউনিয়নের পূর্ব নৈনগাঁও গ্রামে। শিক্ষার্থীটি উপজেলার মহিবুর রহমান মানিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং পূর্ব নৈনগাঁও গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের এক দিনমুজুরের মেয়ে। অপহরণকারী মো. আশকর আলী একজন বখাটে লম্পট ও মাদকাসক্ত একই গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর ছেলে।
এ ঘটনায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর অপহরণের শিকার কিশোরীর পিতা নিজে বাদি হয়ে অপহরনকারী মো. আশকর আলীকে প্রধান আসামী করে আরো ২/৩জনকে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিকে মামলায় অর্ন্তভূক্ত করে দোয়ারাবাজার থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগসূত্রে জানা যায়,ঘটনার বেশ কয়েকমাস আগ থেকে ঐ কিশোরীটি প্রতিদিন স্কুলে আসা যাওযার পথে বখাটে ইভটেজার অটোরিকসা চালক আশকর আলী তাকে উত্ত্যক্ত করে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। মেয়েটি মান সম্মানের ভয়ে মুখ বুঝে এসব অপমান সহ্য করে আসছিল। ঐ বখাটে মেয়েটিকে তার প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যাবে বলেও হুমকি দিয়ে আসছিল। পরে ঘটনাটি কিশোরী তার বাবা মাকে অবহিত করেন।
ঘটনার দিন রাত আনুমানিক ১১টায় অপহরণকারী মো. আশকর আলীর নেতৃত্বে আরো ২/৩তন মিলে পূর্ব নৈনগাঁও কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে তার পিতাকে জরুরী কথা আছে বলে দরজা খুলতে বলেন। মেয়েটির পিতা ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে দিলে আশকর আলী গংরা মেয়েটির বসতঘরে প্রবেশ করে বৃদ্ধ পিতামাতাকে বেদড়ক মারপিঠ করে আহত করে ঐ মেয়েটির মুখে চাপা দিয়ে ধরে ঘর থেকে বের করে সিএনজিতে করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এই ঘটনা কাউকে বলার চেষ্টা করা হলে মেয়ের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ছাতকের দিকে রওয়ানা দিয়ে চলে যায়। তাৎক্ষনিক মেয়ের পিতামাতা চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে বিভিন্নস্থানে খোঁজ খবর নিলেও মেয়েটির কোন সন্ধান মিলেনি। এই সমাজে একজন সবল দ্বারা একজন র্দূবল মানুষ প্রতিনিয়ত নির্যাতিত হতে পারে না। এই দেশে প্রতিটি ধর্মের মানুষের সমধিকার নিয়ে বসবাস করার কথা সংবিধানে উল্লেখ থাকলে ও প্রতিনিয়ত আশকর আলীর মতো কিছু লম্পট দ্বারা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন,নারী ও কিশোরী ধর্ষন,অপহরণ এবং নির্যাতনের শিকার হলে ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে আইনের কাঠগড়ায় তাদের দাড়ঁ করাতে না পারায় তারা পার পেয়ে এই সমস্ত ঘটনা একের পর এক ঘটিয়ে চলেছেন।
এ ব্যাপারে কিশোরীর পিতা কান্নাজড়িত কণ্ঠে গণমাধ্যমকর্মীদের জানান,আমি অসহায় একজন সংখ্যালঘু মানুষ বলে ঐ বখাটে অপহরনকারী মো. আশকর আলী আমার মেয়েকে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। আমি আমার মেয়েকে উদ্ধার ও অপহরণকারী আশকর আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপারের নিকট দাবী জানান।
এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রিংকু কুমার দেব আক্কেপ করে বলেন,গুটিকয়েকজন লম্পট দ্বারা প্রায় সংখ্যালঘু নারী অপরহণ ও নির্যাতনের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে এটা দুঃখজনক। তিনি নৈনগাঁও গ্রাম থেকে অপহিৃত কিশোরীকে উদ্ধার এবং অপহরণকারী লম্পট অটোরিকসা চালক মো. আশকর আলী গংদের দ্রæত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ সুপারের নিকট জোর দাবী জানান। এমন একটি ঘটনায় দোষীরা শাস্তি পেলে দ্বিতীয় আরেকটি এ ধরনের জঘন্য ঘটনা ঘটানোর সাহস পাবেনা তারা।

এ ব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) দেব দুলাল ধর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান কিশোরীকে উদ্ধারে এবং অপহরনকারীকে গ্রেপ্তারের পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত আছে। #

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!