
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘জাতিকে যদি উন্নত করতে হয়, শিক্ষা ছাড়া উপায় নেই। আমরা যে অবস্থায় আছি তার চেয়ে একটু ভালো অবস্থানে আমাদের সন্তানদের দেখতে চাই। আর এর জন্য সন্তানদের সুশিক্ষিত করার বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই, জ্ঞান অর্জনের কোনো বিকল্প নেই।’
শনিবার রাজারবাগের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ৭৮৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। পরে শিক্ষার্থীদের হাতে বৃত্তি তুলে দেন কমিশনার।
এইচএসসি, এসএসসি, ও-লেভেল, উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি ও শিক্ষাসহায়তা বৃত্তি ক্যাটাগরিতে বৃত্তি প্রদান করা হয়। ভালো ফলাফলের জন্য এইচএসসিতে ২৭৫ জন, এসএসসিতে ৩৩৬ জন, ও-লেভেলে ২ জন, উচ্চ শিক্ষাবৃত্তি ৮৩ জন ও শিক্ষাসহায়তা বৃত্তি পেয়েছে ৮৮ জন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কমিশনার বলেন, তোমাদের আজকের এই সফলতা জীবনের একটা ক্ষুদ্র পদক্ষেপ। তবে প্রতিটা পদক্ষেপে সফল হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কেউ তোমাকে তার অবস্থান ছেড়ে দেবে না। তোমাকেই তোমার অবস্থান অর্জন করে নিতে হবে। জীবনে সফলতার শর্টকাট কোনো রাস্তা নেই, জ্ঞান অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। কর্মক্ষেত্রে জ্ঞানের ঘাটতি নিয়ে সফল হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
মাদকের কুফল থেকে বাঁচতে এর থেকে দূরে থাকতে হবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জীবনে ভুল করেও কখনো মাদকের সাথে জড়িত হবে না। কোনো মাদকাসক্ত ব্যক্তি জীবনে সফল হয়েছে এমন একটাও নজির নেই। মাদকাসক্ত হয়ে মা-বাবার স্বপ্নকে ধ্বংস করা যাবে না। কোনোভাবেই মাদক গ্রহণের মতো পাপের রাস্তায় পা বাড়ানো যাবে না।
তিনি বলেন, বাবাকে বাবা হিসেবে মূল্যায়ন করতে হবে তার পদমর্যাদার হিসেবে নয়। প্রত্যেক বাবা-মাই তার সন্তানকে মানুষ করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে থাকেন। বাবা-মার সেই চেষ্টাকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। সন্তান যেন মানুষ হয় সে চেষ্টায় বাবা মা কঠোর পরিশ্রম করেন।
শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মীর রেজাউল আলম। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ পুলিশ ইউনিট। এখানে প্রায় ৩৪ হাজার পুলিশ সদস্য কর্মরত আছেন। এ ইউনিটে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সন্তানদের সুশিক্ষায় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে চালু হয় এই শিক্ষা বৃত্তি। বর্তমান কমিশনার বৃত্তি প্রাপ্তদের সংখ্যা ও অর্থের পরিমাণ বৃদ্ধি করেন।
বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে অনুভূতি ব্যক্ত করে একজন শিক্ষার্থী বলেন, শিক্ষার্থী বন্ধুদের পক্ষ থেকে ডিএমপিকে এরকম সুন্দর একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। এটি ভবিষ্যতে আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাবে। তাই আশা রাখবো এধরনের আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে এবং আমাদের মতো যতো শিক্ষার্থী আছে তাদেরও অনুপ্রেরণা জোগাবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কশিনার (ট্রাফিক) মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) আসাদুজ্জামান, ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।