চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার খাল-বিলে পানি না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন কৃষকরা। বর্ষার ভরা মৌসুমে এসব খাল-বিল পানিতে থৈ থৈ করার কথা থাকলেও এবার দেখা মিলছে না এমন চিত্র। এদিকে অনাবৃষ্টিতে তীব্র তাপদাহে ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে জমিতে সেচ অব্যাহত রাখতে হচ্ছে কৃষকের। ফলে বেড়ে যাবে খরচ। তবে অনাবৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।

জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার আট ইউনিয়নের উচু ভূমিগুলোতে পানি না থাকায় কৃষকরা পড়েছেন ভোগান্তিতে। নদী এবং মাছ চাষের পুকুর ছাড়া কোথাও পাট জাগে ফেলার মতো মিলছে না প্রয়োজনীয় পানি। কোনো উপায় না পেয়ে কৃষকরা পাট কেটে ক্ষেতেই ফেলে রাখছেন। অনেকে ছোট ছোট জলাশয়ে কাদাঁযুক্ত হাটু পানির মধ্যে পাট জাগ দিচ্ছেন। এতে পানি পচে দুর্গন্ধ বের হওয়ার পাশাপাশি রোগ জীবানু বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া তীব্র তাপদাহে পাট গাছ গুলো মরে যাচ্ছে।

তাড়াশ উপজেলার নবিপুর গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, প্রয়োজনীয় পানি না পেয়ে নিচু জায়গায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে জাগ দিচ্ছেন অনেকে। এতে পানির অভাবে পাটের আঁশ আর সোনালি না থেকে কালো রঙের ফ্যাকাসে হয়ে যাচ্ছে। অথচ বর্তমান পাটের মূল্য জাতভেদে দুই হাজার আটশত থেকে তিন হাজার টাকা করে। এদিকে জমি থেকে অনেক দূর বহন করে নিয়ে পাট জাগে ফেলতে হচ্ছে বলে কৃষকদের পাট উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে

উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের রংমহল এলাকার আফজাল হোসেন জানান, বর্ষার পানি না থাকার কারণে সড়কের খাদে জমা বৃষ্টির পানিতে পাট জাগে ফেলতে হচ্ছে। কম পানিতে জাগ দেওয়া পাটের আঁশ কালো ও চটাচটা হয় বলে তা কম দামে বিক্রি করতে হয়। পাটের ফলন এবার ভালো হলেও প্রয়োজনীয় পানির অভাবে পাট জাগ দিয়ে আশঁ ছাড়ানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, তাপদাহে ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে জমিতে সেচ অব্যাহত রাখতে হচ্ছে কৃষকের। পাট জাগ দিতে পানি সংকটে কৃষকের ভোগান্তি হচ্ছে অনেক। তবে অনাবৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত ফসলের বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!