নাহিদুল আলম শুভ

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। কোরবানি করা সকলের জন্য জরুরি,যাদের সামর্থ্য আছে। মুসলিম উম্মাহের জন্যে তথা কোরবানি দেওয়ার জন্য যে অর্থ থাকা প্রয়োজন বা সমপরিমাণ সম্পদ থাকা প্রয়োজন তার উপর কোরবানি ওয়াজিব, জরুরি, বাধ্যতামূলক।

কুরবানি (আরবি: قربانى‎‎) কুরবান অথবা আদ্বহা বা আযহা ( أضحية) কে ইসলামী আইন হিসাবে উল্লেখ করা হয়, যা ঈদ উল আযহার সময় পশু উৎসর্গের অনুষ্ঠান। ইসলামি মতে কুরবানি হচ্ছে নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট ব্যক্তির আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পুরস্কার লাভের আশায় নির্দিষ্ট পশু জবেহ করা। মুসলমানদের পবিত্র আল কোরআনের তিনটি স্থানে কুরবানির উল্লেখ আছে যার একটি পশু কুরবানির ক্ষেত্রে এবং বাকি দুটি সাধারণ ভাবনার কাজ বোঝাতে যা দ্বারা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া যায়। ঈদ উল আযহার নির্দিষ্ট দিনের বাইরে খাওয়ার জন্যে পশুহত্যা কে ইসলামে জবেহ বলা হয়ে থাকে। কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান পুরুষ মহিলার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এটি ইসলামের মৌলিক ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব নবীর যুগেই কোরবানি পালিত হয়েছে।

আল্লাহ বলেন হে নবী! ওদের বলুন, আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ – আমার সবকিছুই বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। তিনি একক ও অদ্বিতীয়। এ আদেশই আমি পেয়েছি। আমি সমর্পিতদের মধ্যে প্রথম। সূরা আনআম, আয়াত ১৬২-১৬৩

কিন্তু মনে রেখো কোরবানির মাংস বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ-সচেতনতা। এই লক্ষ্যেই কোরবানির পশুগুলোকে তোমাদের অধীন করে দেয়া হয়েছে। অতএব আল্লাহ তোমাদের সৎপথ প্রদর্শনের মাধ্যমে যে কল্যাণ দিয়েছেন, সেজন্যে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো। হে নবী! আপনি সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দিন যে, আল্লাহ বিশ্বাসীদের রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না। সূরা হজ, আয়াত ৩৭-৩৮

মনে রেখো, এ ছিল এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে সুযোগ দিলাম এক মহান কোরবানির। পুরো বিষয়টি স্মরণীয় করে রাখলাম প্রজন্মের পর প্রজন্মে। ইব্রাহিমের প্রতি সালাম। এভাবেই আমি সৎকর্র্মশীলদের পুরস্কৃত করি। সূরা সাফফাত, আয়াত ১০৬-১১০

কোরবানি পশুর মাংস তিন ভাগে বিভক্ত করে ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আপন মহিমায় উৎযাপন হোক আমাদের কোরবানি। বিবাদ বিভাজন জড়িত না থাকুক মনে, সকলর সাথে আমাদের সুসম্পর্ক থাকতে হবে। পশু কোরবানির আগে মনের পশুত্ব দূর করতে হবে। অপরের প্রতি সদারচণ করা ঈদের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। আমাদের এটি মেনে চলতে হবে। কোরবানি হোক আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। ত্যাগের মহিমায় পালিত হোক আপনার কোরবান। পশু কত কিংবা কোরবানি দিবে কিনা এসব প্রশ্ন থেকে বিরত থাকুন। আল্লাহ সহায় হোন, আল্লাহ সকল কুরবান দাতার কোরবানি কবুল করুন। ঈদুল আযহা নিয়ে আসুক অনাবিল আনন্দ। সারিসারি হাসিমাখা দিনের হোক দেখা। সকল দুঃখ কষ্ট চলে যাক মন থেকে। আনন্দে মেতে উঠুক প্রাণ। মানবিক মানুষ হয়ে মানবতার জয়জয়কার হোক চারদিকে।
“ঈদ মোবারক” ঈদের শুভেচ্ছা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!