
সিরাজগঞ্জে ধারাবাহিকভাবে যমুনা নদীর পানি বাড়ায় তলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক এলাকা। বাড়িতে পানি ঢোকায় মানবেতর জীবন যাপন করছে মানুষ। এখনও এসব এলাকায় পৌঁছায়নি ত্রাণ।
জেলার দুই পয়েন্টেই যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল ৬টায় কাজিপুর পয়েন্টে ৫৪ সেন্টিমিটার ও শহররক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যমুনার পানি প্রবাহিত হয়।
এর আগে সোমবার দুপুর ১২টায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার এবং শহররক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়।
মুনার নিম্নাঞ্চলের পাশাপাশি ফুলজোড়, করতোয়া, বড়াল, হুড়াসগর, ইছামতীসহ চলনবিলের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।
পানি জমে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কাঁচা পাট, তিল, কাউন, বাদামসহ বিভিন্ন শাক-সবজি। লোকসানের মুখে পড়ছেন এই অঞ্চলের কৃষকরা।
ঘরে পানি ঢোকায় অনেক বাড়িতেই জ্বলছে না চুলা। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়ি ছেড়েছেন। কেউ ঠাঁই নিয়েছেন উঁচু বাঁধ বা নির্মাণাধীন ভবনে আবার কেউ রাস্তার ধারে ছাপরা ঘর করে থাকছেন।
প্লাবিত কোনো এলাকায় এখন পর্যন্ত ত্রাণ পৌঁছায়নি।
এ বিষয়ে জেলার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, ‘সোমবার বিকেলে জেলার পাঁচ উপজেলার জন্য ১৪০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে চৌহালী উপজেলায় ৩ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হবে।
‘এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে ৭৭১ টন চাল ও ১৩ লাখ ৮২ হাজার ৫০০ টাকা মজুত আছে। দুর্ভোগে থাকা মানুষের কাছে সময়মতো এই সহায়তা পৌঁছে যাবে।’
নদীর পানি বাড়ায় জেলার বেলকুচি, কাজিপুর, চৌহালী, এনায়েতপুর ও শাহজাদপুরের চরাঞ্চলে শুরু হয়েছে নদীভাঙন। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যমুনার পানি দ্রুত বাড়ছে। ২২ থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত পানি বাড়ার আশঙ্কা আছে।
‘এর মধ্যে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করলেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। স্বাভাবিক প্লাবন হলেও বন্যা বা আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা কম। ভাঙনকবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।