দেশের তিনটি ভূ-খণ্ডকে সরাসরি যোগাযোগ নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন বেশ আলোচিত হয়েছে। তাতে দেখানো হয়েছে পদ্মা ও যমুনা ত্রিমুখী সেতু এবং করিডোর মাহাসড়ক নির্মাণ করে দেশের তিনটি ভূ-খণ্ডের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব, যার উপযোগিতা অনেক বেশি।

ত্রিমুখী সেতু নির্মাণের প্রস্তাবকে যুগোপযোগী হিসেবে আখ্যা দিয়ে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের প্রতি অনেকে অনুরোধ করেছেন।

প্রস্তাবিত ওই ত্রিমুখী সেতু করিডোর মহাসড়ক নিয়ে একটি কল্পচিত্র প্রকাশ করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক এস এম আতিয়ার রহমান।

তিনি জানান, এ প্রস্তাবটির উপযোগিতা সহজে বোঝাতে এ কল্পিতচিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ার পর সম্প্রতি পরিকল্পনা মন্ত্রী; পাটুরিয়ায় আরেকটি সেতু তৈরির বিষয়ে সমীক্ষা করার কথা বলেছেন এবং সেটি প্রায় শেষ দিকে বলেও জানিয়েছেন। কিন্তু সেখানে আরেকটি সেতু না করে ভবিষ্যৎ এর জন্য বৃহত্তর পরিসরে চিন্তা করে দেশের তিনটি ভূ-খণ্ডকে কানেক্টিভিটির আওতায় আনা যায়। এতে আরিচায় ত্রিমুখী সেতু করা এবং করিডোর মহাসড়ক নির্মাণের উপযোগিতা অনেক বেশি। কল্পিতচিত্রে বিষয়টি স্পষ্ট করে বুঝানো হয়েছে।

আতিয়ার রহমানের দাবি, পদ্মা নদীর মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটারের মধ্যে আরেকটি সেতু নির্মাণ না করে; আরিচায় ত্রিমুখী সেতু তৈরি করা অত্যন্ত সম্ভাবনাময়। কল্পচিত্রে স্পষ্টতই ত্রিমুখী সেতু ও করিডোর মহাসড়কের চিত্র স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম খুলনায় গেলে তার কাছে এ প্রস্তাব এবং কল্পিতচিত্রটি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

প্রস্তাবের সারসংক্ষেপে তিনি উল্লেখ করেন, আরিচায় প্রস্তাবিত এ ত্রিমুখী সেতুর সর্বমোট দৈর্ঘ হতে পারে ১৬ কিলোমিটার ও সংযোগ সড়কসহ সেটা দাঁড়াবে ৩০ কিলোমিটারে বেশি। এটি বিশ্বের দীর্ঘতম সেতু ছাড়াও ত্রিমুখী সেতু হিসেবে এটি প্রথম হবে। এটি দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চল, উত্তরাঞ্চল এবং পূর্বে ঢাকা ভূ-খণ্ডের ৪৮টি জেলাকে যুক্ত করার মাধ্যমে প্রায় ১৩ কোটি মানুষের সরাসরি যোগাযোগ নিশ্চিত করবে।

এছাড়াও ত্রিমুখী সেতুতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার গাড়ি চলাচল করতে পারবে। এতে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৩ শতাংশের ওপরে। সেতু এবং সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়নকালে কর্মসংস্থান হবে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ৫ লাখ মানুষের। এছাড়া মাওয়া ভায়া আরিচা থেকে যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত করিডোর মহাসড়কের দূরত্ব কমে হবে ১৬০ কিলোমিটার।

 

মহাসড়কটি ঘিরে নতুন দুটি অর্থনৈতিক জোনও করা সম্ভব। এতে কমপক্ষে পাঁচ হাজার নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠবে। প্রতিদিন করিডোর মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করবে ৭ থেকে ৮ হাজার গাড়ি। পদ্মা সেতু নির্মাণের সাফল্য ও অভিজ্ঞতায় নতুন প্রস্তাবিত এ সেতু ও করিডোর মহাসড়ক নিজস্ব অর্থায়নেই সম্ভব বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Don`t copy text!
%d bloggers like this: