নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে আইন শৃংখলার ১২ টা বাজিয়ে টেকনাফ থানায় বদলি হলেন ঈদগাঁও থানার ওসি আবদুল হালিম। শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) ঈদগাঁও থানা থেকে বিদায় নিয়ে টেকনাফের উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

জানা যায়, ঈদগাঁও থানায় ওসি আবদুল হালিম যোগদানের পর থেকে শুরু হয় ইয়াবা,খুন ডাকাতি, জবর দখল, অপহরণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধ ।অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয় ঈদগাঁও উপজেলা। থানায় কোন মামলা নেয়নি সাধারণ মানুষের। এমনকি সাধারণ ডায়েরী করতে করতে গিয়ে চরম হয়রানি শিকার হয়েছে এলাকার লোকজন। আবার এমন ঘটনা ও রয়েছে থানায় এজাহার দেয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে আসামীর কাছে খবর পৌঁছে গেছে।এ সব বিষয় নিয়ে সাধারণ জনগণ সহ সবার কাছে বিতর্কিত হলেও কতিপয় অসাধু লোকজনের কাছে খুবই প্রিয় ছিল ওসি আবদুল হালিম।

গত ২৭ অক্টোবর ঈদগাও ইউনিয়নের কানিয়া ছড়া এলাকার নিরীহ গোরামিয়ার ১৪৪ ধারা অমান্য করে দিন দুপুরে জায়গা জবর দখল করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ করে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময়ে গোরা মিয়ার পক্ষ থেকে ওসি হালিমকে ফোন করলে একটি বারও ফোন রিসিভ করে নাই এই বিতর্কিত ওসি ।
পরে নিরুপায় হয়ে এরা ৯৯৯ ফোন করে ঈদগাঁও থানার এ এসআই রাকিব ঘটনা স্থলে গিয়ে বাদীকে হুমকি দিয়ে বল ৯৯৯ নাম্বারে কেন ফোন দিলেন আবার ফোন দিলে অসুবিধা আছে। এই ওসি আবদুল হালিমের কান্ড।
২৩ অক্টোবর রাতে ঈদগাও বাজারের আলহেরা ফার্মেসীর মালিক সোহেল কে অপহরণ করে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে।

২১ জুলাই ঈদগাঁও বাজার থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় সড়ক অবরোধ করে এশিয়ান টেলিভিশনের ঈদগাঁও উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ ওসমান গনি ইলি কে ছিনতাই করে ৩০ হাজার টাকা ও মোবাইল, মোটরসাইকেল ছিনতাই করে কিশোর গ্যাং ।পরে পুলিশ এসে মোটর সাইকেল উদ্ধার করেন। ২৭ জুলাই এ ঘটনায় এজাহার দায়ের করলেও এখনো মামলা রেকর্ড হয়নি থানায়।
৩০ জুলাই রাতে ঈদগাঁও মাদবর মার্কেট কিশোর গ্যাং এর হামলার শিকার হয় এক যুবক। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। গত ৩ আগষ্ট বৃহস্পতিবার রাত ঈদগাঁও ছাগলের দোকান সংলগ্ন একটি বিউটি পার্লারে কিশোর গ্যাং এর হামলার শিকার হয় নববধূ ও তার আত্মীয় স্বজনরা। তাদের চিৎকার শুনে লোকজন এগিয়ে আসলে ছিনতাইকারী কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা পালিয়ে যায়। আহতদের উদ্ধার করে ঈদগাঁওর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরই কিছু দিন আগে রাতে মেহরঘোনা থেকে অস্ত্রধারীরা গরু লুট করে। এরই কয়েক দিন আগে ইসলামাবাদ খোদাইবাডী ঢালার দোয়ার এলাকায় কিশোর গ্যাং এর হাতে তারেক নামের যুবক খুন হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। এরই কয়েক দিন আগে ইসলামপুরে স্বামী নিজ শিশু কন্যা ও স্ত্রীকে খুন করে। এরই সাপ্তাহ ব্যবধানে ইসলামপুরে বসতবাড়িতে ডাকাতি,এরই কয়েক দিন আগে ইসলামাবাদে কিশোরী ধর্ষণ। এর পর কয়েক দিনের ব্যবধানে পুলিশের নির্যাতনে ইসলামাবাদ ইউসুফের খীলের আসামীর মৃত্যু। সব ঘটনা গন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অন্যদিকে ঈদগাঁও উপজেলায় আশংকা জনক হারে বাড়ছে মরন নেশা ইয়াবা বিকিকিনি। ওপেন সিক্রেট চলছে ইয়াবা ব্যবসা।

২০ জূলাই ঈদগাঁওয়ের ইয়াবা সম্রাট সোহেল গাজিপুরে র‌্যাব-৩ এর অভিযানে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হলে তার সিন্টিকেটের লোকজন কিছুদিন গা ঢাকা দিলে ও এখন আগের অবস্থায় ফিরে আসে।
কিশোর গ্যাং এর হামলার শিকার সাংবাদিক উসমান গনি ইলি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ২৭ জুলাই থানায় এজাহার দায়ের করার পর আজ পর্যন্ত মামলা রেকর্ড হয়নি। তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন কিশোর গ্যাংরা প্রকাশ্যে প্রান নাশের হুমকি দিচ্ছে।

কক্সবাজার নারীও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনাল ৩ স্পেশাল পিপি ঈদগাও উপজেলার পোকখালীর এডভোকেট একরামুল হুদা বলেন, কিশোর গ্যাং দিয়ে এখন ইয়াবা বিক্রি, পাচার এবং সেবনে জড়িয়ে পড়েছে। অনেক কিশোর গ্যাং দিনদুপুরে মোটরসাইকেল ছিনতাই করছে। খুনের মত ঘটনায় জড়িয়ে যাচ্ছে। এমন কোন স্থান নেই যেখানে বখাটের উৎপাত নাই। তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কিশোর গ্যাং কালচার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি । এলাকাবাসী এই বিতর্কিত ওসির তদন্ত পুর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Don`t copy text!